গড় কর লো বাতাসী, গড় কর ।
তুর আংরাপুঢ়া জীবনটোকে টুকু ধইন্ন কর ।
ইমন জিয়ন্ত ঠাকুর তুই কুথাও পাবিস নাই
ই তুদের পাতাল ফুঁড়া বোম ভলা লয়
তেল সিন্দুরে জবজব্যা ভৈরববাবাও লয়,
ই যে হামদের গরবের কবি ঠাকুর লো !


দেখ’ন কিমন বহ্মা ঠাকুরের পারা ধবধব্যা দাড়ি
ফকির বাবার পারা পা তক্ক ঢিলা ঢালা কামিজ
গটা শরীলটোল্যেয় বিদ্যা যিমন ঠিকরাঞ বাহিরাছ্যে
একবার দেখলেই সব্বারই পেন্নাম করত্যে মন যাবেক ।
হবেক নাই কেনে ? আম গাছে ত আমড়া ফলবেক নাই !
কন বংশের ছিল্যা ছিলেন সিটাও’ত দেখত্যে হবেক ?


কবি ঠাকুর বহুৎ সোন্দর পইদ্দ লিখত্য লো বাতাসী
তেমনেই বাঁধথ্য গান – শুনল্যে বুকটো জুড়াঞ যায় ।
শুনিস নাই ?  ইস্কুলের বিটিছিল্যাগুলান কান্দে কান্দে গায়
কেউ কেউ আবার হাত লাড়্যে লাড়্যে কমর দুলায় ।
অমন সোন্দর গানগুল্যানে বাপু কান্দার কি আছে  ?
হামি দিমাগ খাটায়েও আজ তক্ক বুঝত্যে পারলি নাই ।


কী করে জানবি রে বাতাসী কবি ঠাকুরের মাহাত্মি ?
ইস্কুলেও যাস নাই, কিতাবও ছুঁয়ে দেখিস নাই
কবি ঠাকুরও তাই তুদের ধরা ছুঁয়ার বাহারেই থাকলেন ।
তুদের আমড়া আঁটির পারা জীবনটোতে’ত খালি
কৈলা-ঘুঁট্যা-কাঠ-চুলাহ, ভাত-মুড়ি-পিঁয়াজ-নঙ্কার ভিড়
কুমারপাড়ার গরুর গাড়ি আর ঢুকবেক কন পথ দিয়ে ?


তুর কী দোষ বাতাসী – তুকে উঁরা জানত্যেই দেয় নাই
জানল্যে যদি উনার গপ্ফের চারুলতা, নন্দিনী, বিনোদিনীরা
তুকেও দলে টানে, তাল্যেই উঁদের ঘটি-বাটি সব ডুববেক ।
তারল্যে যিমন আছিস থাক, গন্ডা গন্ডা ছিল্যাপুল্যা মানুষ কর,
মুহ বুঁজে গঁগার মতন মরদদের সব বেইজ্জতি হজম কর
শির উঠাবিস নাই, দংশান’ত দুর – ফঁস করতেও দিবেক নাই ।


ঠাকুর কারুর বাপের লয় – ঠাকুর’ত গটা জগতের কবি
কবি ঠাকুর লিজের মুখে বল্যে গেছেন – হামি তুমাদেরই লক ।
পৈসায়ালা থাক্যে ফকির, পন্ডিত থাক্যে মুখ্খু,  উনি সব্বার ।
তাইল্যে বাতাসীরা কেনে আনপঢ় বদনাম লিয়ে আঁধারা কালকুঠরীতে
গটা জীবন গুঁমরাঞ মইরবেক ? ঠাকুরের হক পাওনা উঁদেরও ।
দেড়’শ হোক আর হাজার – পাওনা না মিটাঞ ঠাকুরেরও ছাড় নাই ।