ভেঙ্গে দাও সেই সমাজ


আমার বাংলা মায়ের রুপ দেখে বিমুগ্ধ হই
বিস্মিত হই বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে
বাস্তবতা কতই না নিষ্ঠুর ,ভীষণ কঠিন
হাহাকার আর ক্ষুদার নির্মম আর্তনাদ
ঘিরে আছে আজ অক্টোপাসের মতন
অগণিত জীবনে লেগে আছে প্রতিদিন
ক্ষুদার যন্ত্রনা আর পরপারের হাতছানি
কতটা জীবন আজ নির্মম বেদনায়
এক মুঠো অন্ন আর বিন্দু বিন্দু সুখ
কাঙ্গালের করুণ চাহনি,
দু’চোখে ব্যর্থতার অসহায় বহি:প্রকাশ
ঘন আঁধারের চাদরে ঢাকা সুদীর্ঘ রাত্রি
বুক পাজরের হাড় এক দুই তিন -----
জীবন্ত কিছু‚ কঙ্কাল।


ক্ষুধাতুর,ছিন্নহারা ও বস্র হারা মানুষরা
এই বাংলায় বাস্তব মানচিত্র হয়ে তারা ঠায় দাঁড়িয়ে।
মুখ আছে তাদের তবে ভাষা নেই
চোখ আছে তবু অশ্রু নেই
নি:শেষ আজ তাদের নয়নের জল ধারা
নিত্য তাদের জীবনে নেমে আসে বেদনার অমানিশা।


বৈশাখের খর দুপুরে তাদের তৃষ্ণাত্ব বক্ষ
হৃদয় জুড়ে তাদের একটাই হাহাকার
দু’বেলা তাদের গিলতে হয় দূ:খ যন্ত্রনা
সইতে হয় অসহ্য জীবন্ত লাশের কষ্ট।


বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টির ছন্দে
অথৈ জলে তাদের জীবন ভরে উঠে নিরানন্দে
এতটুকু নীড় সান্ত্বনার আশ্রয় খুজে ফিরে তারা বারেবার
কোন বটবৃক্ষ বা জীর্ণ শীর্ণ ছাউনি টা একমাত্র ভরসা।


প্রকৃতির ঋতু বৈচিত্রে শীতের আগমনী বার্তা
নিদারুণ কষ্টে কাটে তাদের জীবন
শীতবস্র নেই আছে মুক্ত দেহ।
সামান্য টুকু মায়া ও  ভালবাসা আজ  বন্দী
শোষিত সমাজের ঐ তাপনিয়ন্ত্রিত ঘরে।


ওরা অসহায়, নি:সম্বল ওরা নিপীড়িত
ওরা শোষিত লাঞ্ছিত ওরা বঞ্চিত
ওরা চ্যুত,নিগৃহীত ওরা ধিকৃত
ওরা অবহেলিত , অপমানিত ওরা অভিশপ্ত
তথাকথিত সমাজে তাদের স্থান নেই
নেই তাদের বসবাসের অধিকার
ফিকে ভদ্র সমাজ এর ভদ্র শোষণ কারীরা
অহমিকায় তাদের ধিক্কার দেয়
ন্যায্য অধিকার টুকুও কেড়ে নেয়।


বসন্তের মুক্তো ঝরানো অনিল প্রবাহে
কোকিলের কুহু কুহু  কলতান ধ্বনি
শ্রবণের অধিকার ও তারা পায় না
বিধাতার প্রকৃতির অসীম মায়া মমতায়
দুর্বলের অধিকার হতেও বঞ্চিত করে
সমাজের পূজনীয় সম্মানীয়  মিছে সমাজসেবীরা
আভিজাত্যের মোড়কে মানবতা কে করে বন্দী
অপামর মজলুমের রক্ত চুষে খায় পিশাচের দল
এই সমাজের গলা টিপে ধরতে হবে
অত্যাচারীর অত্যাচার রুখতে হবে
গুড়িয়ে দিতে হবে শোষকের কালো হাত
জ্বালিয়ে দিতে হবে মানবতাহীনদের অর্থখাত।


দূ:খ হয় রক্তে শিহরণ জাগে
কেন আজ এত মানব ভিক্ষা মাগে
ধনী দরিদ্রের বৈষম্য ভেদাভেদ
মানবো না আর মানিনা বিভেদ
বজ্র কণ্ঠে শক্ত হাতে ধরবো এবার নিশান
যারা ভিখারী যারা দুর্বল যারা ছিন্নমুল কৃষাণ
সবাই তো মানব কেউ দেবতা নয়
দূর করো আছে যত মিছে ভয়
অন্ন নেই বস্র নেই বাসস্থান নেই যাদের
জাগ্রত হও জাগিয়ে তোল তাদের
সকলের কণ্ঠে ধ্বনিত হোক এক আওয়াজ
ভেঙ্গে দাও শোষকের সেই সমাজ।