১৯৮৪ সাল, বৌটা এম. এ. পাশ করলো
কোলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে, তারপর বি.এড
ভাবলাম এবার সুরাহা হবে
বৌটা চাকরী পাবে
ওর শিক্ষিকা হওয়ার খুব সাধ ছিল।


তখন বাংলায় বামফ্রন্টের শাসন
কমরেডরা বড় বড় নেতা
গ্রাম,গঞ্জ, শহর
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়
সব জায়গায় কমরেডদেরই রমরমা, দাপট।


তখনও স্কুল সার্ভিস কমিশন আসেনি
বৌটা স্কুলে স্কুলে অনেক ইন্টারভিউ দিল
কিন্তু কোথাও হেড মাস্টারের মেয়ে চাকরী পেলো
কোথাও সেক্রেটারীর বোন
দু-এক জায়গায় ওর সিলেকশন হয়নি তা নয়
কিন্তু শর্ত সাপেক্ষে, টাকা চাই
কোথাও তিন লাখ, কোথাও চার, কোথাও বা পাঁচ
বৌ বলল, টাকা দিয়ে আমি চাকরী নেব না
তাতে চাকরী হয় হোক, না হয় না হোক।


অগা, বগা, গাধা, গরু
সব টাকা দিয়ে মাস্টার হয়ে গেল
কিন্তু আমার বৌ-টার চাকরী হলো না
কমরেডরা হতে দিল না
ও শুধু রাঁধলো আর কাঁদলো।
কেউ কেউ বলল 'দুর্ভাগ্য'
কিন্তু বুঝলাম না
বৌ-এর দুর্ভাগ্য নাকি দেশের দুর্ভাগ্য।


তাই যখন লাল পতাকা দেখি,
বিপ্লবের কথা শুনি
কমরেডদের হাঁ-মুখ গুলোর ছবি মনে পড়ে যায়
বিশাল বিশাল হাঁ
গা ঘিনঘিন করে উঠে
আমার প্রতিবাদী মন চলে যায় শৈশবে
চিৎকার করে বলে
লাল সুতো, নীল সুতো
কমিউনিষ্টদের মারো জুতো।