বৃৃদ্ধ বাবা বসে কি যেন ভাবছেন ৷
কেউ বোঝতে পারেনি তিনি কী ভাবছেন।


ছোট্র ছেলে বলল— তুমি কী ভাবছো বাবা?


বাবার মুখে কোনো জবাব নেই ৷


সে আবার বলল— বলনা বাবা কি ভাবছো?


এবার বাবা বললেন— তুই শুনবে?


হ্যাঁ বাবা শুনবো।


বাবা বলতে লাগলেন— চোখ বন্ধ করলে আজও দেখতে পাই, হাড় কাপা শীতে কাদা মাখা শরীর।
মাটির গর্তে রাত্রী কাটানো।
মিলিটারির ভয়ে ছাই মাখা মা-বোনের শরীর ৷
ঘর-বাড়ি ছেড়ে দৌরে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
হাত থেকে কিছু পরে গেলেও ফিরে চাওয়ার সময় নেই।
এক পায়ে জুতা, আরেক পা খালি।
নদীতে ভেসে যাওয়া তাজা লাশ।
নদীর রক্তাক্ত পানি ৷
লাশ টেনে নেওয়া রক্তে ভেজা ঘাস।
টাটকা রক্তে বুটের চাঁপ।
রাস্তার পাশে পড়ে থাকা লাশ।
মাঠে কৃৃষকের লাশ।
লাশের দীর্ঘ সারি।
গণ কবর।


আজও আমার চোখে ভাসে— লাশের হাত-পা ধরে কুকুর কামড়াচ্ছে।
টেনে টেনে ছিড়চে কাক আর শকুন।


আমি আজও কান পেতে শুনতে পাই— সন্তান হারা মায়ের আহাজারি ৷
স্বামী হারা বোনের কান্না।
দৌরে পালিয়ে যাওয়া পায়ের তালি।
হাজার হাজার গুলির শব্দ।
দাউ দাউ আগুনের শব্দ।
লাশের পাশে কুকুরের ডাক ৷
রাত নিশিতে সিয়ালের ডাক।


আমি আজও শুনতে পাই।
আজও চোখে ভাসে।
আজও সেই ভাবনায় রাতের ঘুম কেড়ে নেয়।