খাঁচার ভিতর একটি পাখি
আলী আমজাদ আল আজাদ
____________//
খাঁচার ভিতর একটি পাখি বসিয়া নিরালা কাঁদে,
অভাগী জননী পড়িয়াছে ধরা এক শিকারির ফাঁদে।
মুখেতে করিয়া ফড়িং ধরিয়া বাসায় যাবার কালে,
কেমনে জানেনা পরিয়াছে বাঁধা লটকানো এক জালে।


ঘরেতে তাহার ছিল যে দুইটি সদ্য ফোঁটা ছানা,
মায়ের অভাবে কেমনে তাদের বাঁচিবে জীবনখানা!
তাই ভেবে ভেবে মায়ের শুধু চোখের পানি ঝরে,
তাহার ক্ষুদ্র ঠোট দুটো দিয়ে খাঁচায় আঘাত করে।


সেই আঘাতই ফিরিয়া আসে আবার তাহার দিকে,
সুন্দর নীল ঠোট দুটো তার হইল যেলাল ফিকে।
কন্ঠে তাহার ওঠে না কো সুর, চেচিয়ে শুধু যে ডাকে,
আঁখিতে তাহার আসে না কো ঘুম, শুধু চাহিয়া থাকে।


যদি শোনে কোনো মানুষ কিংবাপাখপাখালির ডাক,
ডানা দুটো তার মেলে ধরে তোলে কন্ঠে করুন বাক।
জল ছাড়া সে ছোয় না কিছুই, এভাবেই গেল দিন,
না খেয়ে শোকে অঙ্গ তাহার হইলো জীর্ন শীন।


পাখিটির পানে দেখলো চেয়ে ছোট্ট একটি মেয়ে,
অশ্রু গড়িয়ে পড়লো যে তার কোমল নয়ন বেয়ে।
কারোর দুঃখ সয় না যে তার, সদা করে যাই পারে,
হোক সে মানুষ কিংবা প্রানী, ডরেনাহি দুরে সরে।


সাহস করিয়া দিল সে খুলিয়া খাঁচার দরজা খানা,
পলক ফেলিতে বেরোলো পাখিটি মেলিয়া তাহার ডানা।
উড়িয়া গিয়া বসিলো কাছের গাছের একটি ডালে,
খানিক চাহিলো মেয়েটির পানে তারপর গেল চলে।


কি যেন আশ্বিস করিয়া গেল ছোট্ট মেয়ের পানে,
মেয়েটি হাসিলো হয়তো বুঝিলো সেই চাহনির মানে।
তুফান বেগে উড়িয়া পাখিটি ছুটলো আপন বাসায়,
দেখিবে তাহার আদরের ছানা বাঁধিয়া বুকটি আশায়।


নিজ বাসাতে যেই না মাতা থামলো গিয়ে উড়ে,
ছানা দুটি তার বসলো ঝেপে উষ্ণ বক্ষ জুড়ে।
মায়ের আঁখি হইলো শীতল, উঠলো জলেতে ভরে,
পরান তাহার উঠলো জেগে গিয়াছিলো যাহা মরে ।।।