ভালবাসা, তোমার জন্ম সম্পর্কে আমার জানা নেই,
সম্ভবত তুমি সৃষ্টির আদিকাল থেকেই আছ,
কিংবা মহান এক শিল্পীর প্রথম সৃষ্টি তুমি,
অথবা ভাবতে পারি তুমি ঔশ্বরিক অস্তিত্ব ।


যেখানেই তোমার জন্ম হোক তুমি বহুরুপী ।
যেখানেই তুমি যাও সব কিছু তছনছ করে দাও,
কখনও ভেঙ্গে দাও সুরক্ষিত তসরসম হৃদয়।
তুমি নিদারুন চাতুর্যে দখল কর মনের কতৃত্ব,
কখনও ছলেবলে সেখানে তোমার প্রবেশ।  


মুগ্বতা, ভাললাগা - সবই তোমার অনুপ্রবেশের মন্ত্র,
প্রাথমিক আক্রমনে তুমি সবাইকে কর বিবশ।
কারও কারও জন্য সে আক্রমন বলবৎ আজীবন,
আবার কারও জন্য ক্ষিয়ৎকাল, তারপরই বিষাদ,
হয়ত কখনও সে কারও জন্য বিশেষ আশীর্বাদ,
নয়তবা আজীবন পালিত বিষবাস্পের প্রসাদ।


ভালবাসা, তুমি যখন তোমার ধারাল নখের আচড় দাও,
তখন ভাললাগে, মনে হয় এলোমেলো মুগ্বতা যেন!
ক্ষীনধারায় নেমে যাওয়া রক্তস্রোতগুলো আনন্দধারা,
হয়ত রক্তের উষ্ণতায় খুঁজি তোমার কাঙ্খিত আগমন।


সময়ের হাওয়ায় চড়ে তুমি যাও আমার অনেক গভীরে।  
তারপর শুরু হয় ফুসফুস, পিঞ্জর, পাকস্থলী, ধমনী, অস্থি,
সবখানে তোমার ধারাবাহিক চঞ্চল ও প্রমত্ত চলাচল!
উদার প্রস্ফালনে কখনও ছুঁয়ে যাও ডান ও বাম নিলয়,
তারপর একসময় অনুভব করি তুমি আমার সবটুকু,
তবুও দারুন হতাশায় দেখি, আমি তোমায় চিনিনা ।


আমার তিনকুল ছেড়ে আমি তোমায় আকড়ে ধরি,
বিবেকের কিছু পিছুটান- সেগুলোও ঝেড়ে ফেলি,
আমার ভাবনা, অনুভব, চেতনায় শুধু থাক তুমি ।
আর তোমার হাত ধরে অবলীলায় সেখানে আসে,
দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ, প্রত্যাশা, নিরাশা, বিষন্নতা, সুখ,
আরও নানান অজানা অপার্থিব ও পার্থিব অনুভব !  


অবশেষে আমার কিংবা তোমার প্রস্থানেও দেখি,
শুধু তুমি কিংবা আমি, একাকীত্বের হতাশায় মগ্ন।