শোন কবিতা, আলোকিত কথা
দুর্বার ছেলেবেলা,
পাতা উল্টিয়ে দু-দন্ড দেখা
অতীত আনন্দমেলা।
তন্দ্রাঘোরে শত ফুল ফোটে
মনে পড়ে যায় দিন,
প্রাইমারী স্কুল সহজপাঠে
বন্ধু হওয়া নবীন।
পরিচয় হবে বর্নের সাথে
নির্মল বিস্ময়,
নূতন বই সুগন্ধমাখা
বর্ণপরিচয়।
স্কুলের ঘন্টা প্রার্থনাগীত
স্মৃতির গন্ধে প্রাণ,
সারি সারি বেঞ্চ কিচিরমিচির
উচ্ছাস হাসি গান।
কিশলয় ছড়া প্রথম শ্রেণী
নূতনতর বিশ্ব,
চঞ্চল প্রান আনমনে দেখে
একরাশ সোনাদৃশ্য।
মনের খেয়ালে সমস্বরে
হাট কবিতা পাঠ,
সরল কবিতা মনে করে দেয়
বাংলার নদী ঘাট।
ধারাপাত পড়া ছন্দে দারুণ
সুখময় স্মৃতি ধ্বনি,
বন্দি আছে গহীন মানসে
বুকে স্বর্নখনি।
স্লেটে লেখা গাছ ফুল আঁকা
চুপিচুপি কাটাকুটি,
অঙ্ক কষা নির্মম ভারী
দুরাশার খুনসুটি।
বেলা গড়ালো ইস্কুল ছুটি
কোলাহলে ফেরা নীড়,
বিকেলের রোদ পাঁচিলের গায়ে
খেলার মাঠে ভিড়।
দূরগামী দিন গোধূলি রঙিন
আকাশ প্রদীপ জ্বলে,
সন্ধ্যা তারা উঁকি ঝুঁকি দেয়
নীরব আঁধার ঢলে।
রাত্তির নামে ধাপে ধাপে গাঢ়
খানিক লেখাপড়া,
বিছানাপ্রান্তে ঠাকুমার মুখে
জীন পরিদের ছড়া।
অশরীরী কথা রোমহর্ষক
হঠাৎ নিভলো বাতি,
লোডশেডিংয়ে কম্পিত প্রাণ
লন্ঠনে কাটে রাতি।
ছিল রবিবার মায়াবী দুপুর
চেনা ফেরিওলা হাঁক,
খোলা জানালা রোদ্দুর মাখা
সুখী পায়রার ঝাঁক।
রঙচঙে দিন ঝলমলে বেলা
শীতের রৌদ্র ভোজ,
কমলালেবু কুলের আচার
লুকোচুরিতে খোঁজ।
শুকতারা ফেরে ভাস্বর আজও
আসে যায় দিবাকর,
অস্তাচলে শৈশব মোহ
সময়ের অন্তর।
স্পন্দিত প্রাণ জানে না কখন
গিয়েছে বেলা বয়ে,
জন্ম নিয়েছে পরিনত মন
কর্মব্যস্ত হয়ে।
জীবনের রথ গতিবেগে ধায়
ছায়া ছায়া স্মৃতি ওড়ে,
ইতিহাস যেন ঘুমহীন চোখে
দুয়ারের কড়া নাড়ে।