স্পর্শের ছোঁয়ায় ক্ষণিক প্রকম্পিত হই
এক পশলা বৃষ্টি ভেজা কোমল হাতের ছোঁয়ায়
ক্ষণিক একটু মায়ের স্নেহের শিহরণ পাই
বৃষ্টি ভেজা আমি, ইটের পর ইট
আমার ফসিল দেহে
স্পর্শের ছোঁয়ায়, ক্ষণিক প্রকম্পিত হয়
শুধুই ক্ষণিকের জন্য, শুধুই ক্ষণিকের জন্য


আত্মাকে অনন্ত মাহাকাশে বিদায় দিয়ে
শ্বেত শুভ্র সাদা কাপড়ের আয়োজনে
দেহ আমার মাটির ঘরেই শায়িত হয়েছিল
মাটির অনুজীবেরা, কোষের পরতের কোষকে
আলাদা করেই যার যার দলকে ভারী করেছে
মাটি হয়েই আনন্দে কাটছিল দিনগুলি
এভাবে কতকাল পরে, মাটির ঘরের মাটি
কাচাঁমালে চলে যায় ইট ভাটায় ।


কোষের পরতের কোষের কারিগররা
আমাদের কে ছেনিয়ে, ছাচেঁ ফেলে কাঁচা ইট বানায়
ইটের স্তরে ইট, রৌদ্র প্রখরে শুকিয়ে চয়ে যায়
দোজখের আগুনে, চিমনির ধোয়ায় পোড়া অনুজীবের
গন্ধ বাতাসে হারিয়ে যায়, দেহের প্রানের প্রানের নাশে
পোড়া রক্তবর্ণে আমরা, ভাল মন্দ ইটে পরিনত হই
আমার দেহ রূপান্তরিত হয় প্রাণহীন ফসিলে
ফসিলে! ফসিলে! ফসিলে! ফসিলে!


আবার কোনো স্বপ্ন বোনা মানুষের
ইটের পরে ইটে, অট্টালিকা উঠায়
আমার ফসিল দেহ, অনন্ত দেহের ফসিল
আমরা পৃথিবীতেই রয়ে যাই, প্রাণহীন ভালবাসায়


নিথর ফসিল আমরা শুধু
সংস্পর্শের ছোঁয়ায় ক্ষণিক প্রকম্পিত হই
মানুষের ভালবাসায়, রাগে, আবেগ, স্নেহের স্পর্শে
অনুভূতির স্কেল ক্ষণিকের জন্য উঠে নামে ভিন্ন মাত্রায়
শতক বছর পরে অট্টালিকার ভাঙনে
আবর ইটের পরতে ইট দিয়ে কেউ কেউ ঘর বানায়
দেহ আমার ফসিল হয়ে, মানুষের মাঝেই রয়ে যায়
আমি শুধু সংস্পর্শের ছোঁয়ায় ক্ষণিক প্রকম্পিত হই
আমার দেহ ফসিল হয়েই অনন্ত কাল অবিনাশী
আমি মানুষের চার দেয়ালের ফসিল হয়েই রয়ে যাই।।


--------------------------
সংক্ষিপ্তায়নে কবিতার পটভূমি: ইট ভাটায় গিয়েছিলাম। মৃত্যুর পর দেহ মাটির সাথেই মিশে যায়। আর এই ইট ভাটার মাটির মধ্যেও মানুষের দেহের ভগ্নাশেষ আছে যা পৃথিবীতেই রয়ে যাবে। আমি কি তাহলে ফসিল হয়ে মানুষের মাঝেই বিরাজ করবো প্রাণহীনে?