কে একজন আমাকে সংবাদ দিলো তুমি বাড়িতেই আছো, তাই
বহু কষ্টে তোমার বাড়ির নাম্বার মিলালাম; অলিগলির ভেতরে অসংখ্য বাড়ির ভিড়ে;
গেট খোলার ক্যাঁচ ক্যাঁচ আওয়াজ, ভয়ে ভয়ে ঢুকি বাড়ির ভেতর।
অশরীরী একটি ছায়া আমাকে নিয়ে বসালেন একটি কক্ষে,
এখানে অনেকগুলো মানুষ কবিতা আবৃত্তি করছে, কিন্তু কোন মানুষকে দেখা যাচ্ছেনা,
শুধু কণ্ঠস্বরটাই ভেসে আসছে।
আমি অন্য একটি কক্ষের দিকে হাঁটি-
এখানে কিছু লোকের তুমুল বিতর্ক, ধারণা করছি
প্রগৈতিহাসিকতাকে উত্তর আধুনিকতার মোড়কে প্রতিষ্ঠার ব্যর্থ প্রয়াস;
অথচ কোথাও কেউ নেই, শুধু আওয়াজটুকুই,
দেয়ালে কয়েকজন বিখ্যাত লোকের ছবি, আর সর্ববামে
তোমার নিজের একটি ছবির ফ্রেমে গাদা ফুলের মালা ঝুলছে।
আমি অপলক ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকি, হঠাৎ তোমার পাতলা ঠোঁট নড়ে ওঠে,
এবং আমাকে বলে,
কোন এক রাতের দেয়ালে তোমাকে আমি অপ্রেমের পোষ্টার লাগাতে দেখেছিলাম;
সেটা দেখে মৃত্যু হয়েছে আমার, আজ থেকে বেশ কয়েক যুগ আগে।
আমি নিজেকে খুনী বলে ধিক্কার দিই, এগিয়ে যাই অন্য একটি কক্ষে
পর্দা ফাঁক করে তাকাতেই হঠাৎ চমকে উঠি
একজন দুগ্ধ ফেনিল তরুণীর দেহে থেকে
মাংসগুলো গলে গলে পড়ে যাচ্ছে মাটিতে, মুহূর্তে কঙ্কাল হয়ে যায় সেই তরুণী।
বাইরে পায়ের আওয়াজ, কে একজন এগিয়ে আসছে আমার দিকে
আমি প্রাণপণে ছুটছি ক্রমাগত, পেছনে পায়ের আওয়াজ
ছুটছি প্রাণপণে ক্রমাগত
মুত্যুহীন নিস্তব্ধ সেই প্রান্তরের দিকে,
যে প্রান্তরে একদিন আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।
আমি কি দুঃস্বপ্ন দেখছিলাম!
হবে হয়তো!
------------------------------


[এটি একটি দুঃস্বপ্নের বর্ণনা। স্বপ্নের যেমন ধারাবাহিকতা থাকেনা, তেমনি এই দেখাটার মধ্যেও ব্যক্তি তার প্রিয়তমাকে সনাক্ত করতে পারেনা। অনেক বছর আগে তার কাছের মানুষটিকে সে হারায়। দিনের আলোয়, রাতের অন্ধকারে এদিক সেদিক হাতরায়, খুঁজে সব স্থানে, কিন্তু পায়না। পরে একদিন একটি স্বপ্ন দেখে। এটি সেই দুঃস্বপ্নেরই একটি বর্ণনা।]