হরিদাস, তোর চিঠিটা দুদিন পর পেয়েছি,
তোর অনুভূতিগুলো রূপান্তরের গতিমুখে
বৈরাগ্যের পথচলার ন্যায় যত্রতত্র করে বিস্তার;
তোর ধূসর স্বপ্নগুলো নাকি ইদানিং
কালকে ধারণ করে ঘুমায় মহাকালের বরফ কফিনে,
যেমন চৈত্র কম্পিত কালবৈশাখীর আগাম আশঙ্কায়।


তুই লিখেছিলি-
উন্মাদের নির্দেশে কসাই গায় গণতন্ত্রের গীত
নিয়মের জালে ধরা পড়ে চুনোপুঁটি
জাল ছিঁড়ে বেড়িয়ে যায় অসংখ্য স্বর্গ-দেবতা!
তন্ত্রের বিধান পাহারা দেয় হাড্ডি-সাধুর দল,
মূঢ় বিরামহীন কাঁদে উদোম অরণের আন্ধা-গলির মোড়ে,
লিখে যাচ্ছে সমকালীন ইতিহাস, নিকট অতীত কিংবা
ভবিষ্যতের বিপ্লবী সংবিধানের অমসৃণ দেয়ালে।


তোর টমেটো রঙয়ের রণকৌশল
নির্বিবেক ছবি আঁকে শোকের ক্যানভাসে;
দাঁতাল বর্বর খেয়ে ফেলে রাজ্যের সব বুনো ঘাস,
বেদনারা পড়ে যায় আদিকালের পুঁথি,
দেশ প্রেমের ওজন হয় অপহর্তার মুঠোভর্তি দাঁড়িপাল্লায়।
আশ্রয়ের খোঁজে কাঁদে মানবিক আর্তনাদ
লুণ্ঠিত স্বরের দুর্দশায়,
তোর ফেরারী সন্তানেরা হাই তোলে,
সুদিনের প্রত্যাশায় প্রভাতের দ্বার খোঁজে অসম্মান
চেতনার দাপটে খান খান নিসর্গের প্রাচীর,
অসত্যের হাতিয়ার নিশ্চিত করে অনস্তিত্ব ফেরারী জীবন;
স্বাধীনতার গৌরবোজ্জল চিত্রকর্ম একটার পর একটা মুছে দেয়
স্বৈরতন্তের নতজানু ডাস্টার।


[বৈরাগ্য=অনাসক্ত, ঔদাসীন্য। মূঢ়=বোকা, মূর্খ, নির্বোধ। অপহর্তা=লুটেরা, চোর, ডাকাত, বাটপার। স্বর= প্রতিবাদী কণ্ঠধ্বনি, ন্যায়ের উচ্চারণ, আহ্বান]