আমার ভেতর আমাকে যা বলতে বলে তাই সত্য,
কিন্তু আমি কি আমার ভেতরের সত্যটা
অকপটে স্বীকার করতে পারি, বা বলি?
বা সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারি?
নাকি পারিপার্শ্বিকতা আমাকে যা শেখায়
তাই সত্য বলে চালিয়ে দিই?
আমার যে ভাবনা, তা অনুযায়ী আমি সৃষ্টি করিনা!
আমার ভাবনা এবং সৃষ্টির উপাদানটি
আমাকে কেউ বাহির থেকে চাপিয়ে দেয়!
আমি যা ভালোবাসি, আমি যা চাই
তার মালিকানা আমার নয়,
আমি কর্ম দিয়ে আমার অস্তিত্বকে অর্থপূর্ণ করতে চাই;
কিন্তু সেই কর্মের ফলাফলটিও আমার নয়’
এ জন্য আমি ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পরি,
কারণ, অর্থপূর্ণ কাজের ফলটুকু আমি ভোগ করতে পারিনা!
আমার ভাবনায় আমার স্বাধীনতা নেই!
-----------------------------------------------------------
আমার পরম শ্রদ্ধেয় কবি বন্ধু জনাব পারভেজ শেখ সাহেবের গতকালের “তারুণ্যকে বলছি (সনেট ২৩)” কবিতার মন্তব্য করতে গিয়ে কিছু লেখা লিখেছিলাম। তার সাথে আরও কিছু যোগ করে লেখাটি আজকের আসরে রাখলাম এবং আজকের লেখাটি কবি পারভেজ শেখ সাহেবকে উৎসর্গ করলাম।
----------
[কবি পারভেজ শেখ সাহেবের শুধুমাত্র একটি লাইন- “ওহে সবুজ, হয়োনা হাতের পুতুল”  ছিলো আমার লেখার প্লট।
-----
আমরা অধিকাংশ মানুষ আসলে পুতুল। যেমন-পড়ালেখা করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। ভালো রেজাল্ট করে ভালো চাকরি করতে হবে। এটি একটি কমন ধারণা। এই ধারণাটি ছোটকালে আমাদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। আর সেই পথেই অধিকাংশ ছাত্র হাঁটে। এই ধারণাটি পারিপার্শিকতা বা যে কেউ আমাদের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা যখন বুঝতে শিখি, তখন চিন্তা করি আমি যদি কবিতা লিখতাম ও চর্চা করতাম, তাহলে আমি ও আমার মন তৃপ্ত হতো! কিন্তু আমি দিনের ১৪ বা ১৫ ঘন্টা পরিশ্রম করে টাকা পয়সা কামিয়ে পরিবার নিয়ে ভালো করে চলতে চাই ও সম্পদ বাড়াতে চাই। এই চাওয়াটিও সঙ্গত কারণে আমার ভেতর ঢুকে গেছে। অথচ আমার মানুষের সেবা করা ও ভ্রমন করতে ভালো লাগে। ধরে নেই, এক হাজার শ্রমিকের সম্মিলিত কাজের ফলাফলের মূল্য এক লক্ষ টাকা, অথচ এক হাজার শ্রমিকের মজুরী দশ হাজার টাকা। বাকী নব্বই হাজার টাকা শ্রমিক ভোগ করতে পারেনা। কারণ এভাবেই কে বা কাহারা নিয়মটি বানিয়েছে। আমার ভাবনার নিজস্বতা এখানে নেই। আমি যা করতে চাই, তা আমি করতে পারিনা। এই কথাটিই আমি বলতে চেয়েছি।]