আমি খুবই উদ্বিগ্ন আজকাল
প্রযুক্তি আমাদের ক্রমশ ক্লীব করে ফেলছে
আমরা হারিয়ে ফেলছি সৃজনশীলতা
শেয়ার বাজারের দর পতনের মতো
    নেমে যাচ্ছে রুচিবোধ
সবুজকে যে ভাবে গলাটিপে মেরে ফেলছি
বৃক্ষ আর পাখিরা হয়ে পড়ছে দৃষ্টির আড়াল
উপমারা অপসৃত হচ্ছে সাহিত্যের পাতা থেকে
মৌলিক সৃষ্টিগুলো দুর্বোধ্য হয়ে যাচ্ছে নবীনদের কাছে।


মুঠোফোনে সকাল সন্ধ্যা আটকে থাকে মানুষের চোখ
সে চোখ খোঁজেনা প্রিয়ার মিষ্টি হাসি
সহজলভ্য বিনোদনে
    প্রণয়ের আগেই হয়ে যায় কামের শিক্ষা
কন্যা-জায়া-জননীরা আর নিরাপদ নয় পথে ঘাটে
শিল্পে তাদের ঐতিহ্যগত অবস্থান
    ধ্বসে পড়তে শুরু করেছে অনেক আগে থেকে
কবিতা পাঠকরা দাঁড়িয়েছে সংখ্যালঘুর কাতারে।


চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিজ্ঞান হারিয়ে দিয়েছে
     আমাদের সৃজনশীলতাকে
চারকোনা বাক্সে বিনোদন সুলভ অজস্র চ্যানেলে
প্রণয়ের আগেই বিরহ ঘটে যায়,
      পরিণয়ের হাত ধরে থাকে বিচ্ছেদ
সহনশীলতার চর্চা অনুপস্থিত সমস্ত আচারে
নীতিবোধ হারিয়ে যায় দুর্নীতি পরায়ন সংসারে
বেস্ট সেলার লেখকদের দৌরাত্ম্যে
       মহতপ্রাণ লেখকরা যায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে।


ঋণাত্মক সামাজিক বিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি সবাই
সাফল্যের পেছনে আমাদের শিশুদের
      পাগলা ঘোড়ার মতো লেলিয়ে দিচ্ছি সকলে
বিরাট জয়ের পর ‘ভি‘ চিহ্ন দেখিয়ে চলে উদযাপন
সনদের মোহে ভুলতে বসেছি শিক্ষা।


এক সময়ে বাদ্যযন্ত্রীরা লোপ পাবে
ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রে ফুটে উঠবে হাজারো সুর
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা লিখে দেবে মানানসই কবিতা
পৃথিবী হারাবে প্রাণ।


বড় অসহায়ত্ব নিয়ে লিখতে বসেছি আমি
এ লেখা কেউ পড়বে না জানি
তবু লিখে যাই অসীম খেদে-


'আজ হতে বহুবর্ষ পরে অনুভূত হবে চরম শূন্যতা
আত্ম অনুসন্ধানে আমরা অতীতে তাকাবো
প্রত্ন সময়ে খুঁজে ফিরবো সভ্যতার অহংকার।'


আমার কাব্য কেউ পড়লো না বলে কোন ক্ষোভ নেই
আমার দুর্ভাবনা পোঁছলো না কারো মনে,
    এই হলো ব্যর্থতা আমার
২০১৯ সালের মধ্যরাতে
     আমার এই বিলাপ মিলিয়ে যাবে ইথারে
হয়তো ২১১৯ সালের কোন তরুণ বিজ্ঞানী
      উদ্ধার করবে সে তরঙ্গ
ততদিনে হারিয়ে গেছে সৃজনশীলতার একশত বছর।


৩-৬-১৯। ভোর ২-০৪। সেনওয়ালিয়া