তুমি বাড়ি ফিরে গেছ,
ফিরেই জানালে, আমার প্রিয় সাদা জবা ফুটেছে গাছ ভরে।
গোলাপি রা অতটা ফোটাতে পারেনি নিজেদের,
আমি নেই তাই হয়ত বা রাগ করে....


আরো দু পা যেতেই,
তোমাকে একলা ফিরতে দেখে প্রশ্ন করেছে
কচি সবুজ তুলসীর চারা গুলো।
বাবা তুমি একা কেন?
মা কোথায়?


তুমি সাবলীল বলতে চেষ্টা করেছ
এই আমিই আগে এসেছি,
মা ও এসে যাবে এর পর।
বুড়ি শিউলি গাছ কিন্তু ধ’রে ফেলেছে তোমার বানানো উত্তর।
রেগে মেগে বলে উঠেছে ‘সব মিছে কথা’
ভাল্লাগে না৷  দূর ছাইই..
এ ছানা পোনাদের মুখে সেই এক কথা
‘মা কোথায়’ ‘মা কোথায়’?


খুট করে তালা খুলতেই সামনে রাখা আমার
ঘরে পড়বার আলতা মাখা চটি জোড়া।
পায়ে করে সরাতে গেলে একবার,
তারপর কি মনে করে ভাবলে
থাক, যেখানে যেমন আছে ওরা।


টেবিলের ওপর ফুলদানীতে আধ শুকনো বেল ফুল,
ড্রয়ারের ওপর খুলে রাখা একজোড়া মুক্তোর দুল।
তাকিয়ে, মনে মনে ভাবলে,
এ মানুষ টাকে নিয়ে আর পারিনা
কি করে যে করে এত সব ভুল!


ফ্রীজ খুলে বের করলে বরফ ঠাণ্ডা ভাত ডাল,
তোমার প্রিয় আলুপোস্ত আর মাছের ঝোল।
বিড়বিড় করে বলে উঠলে, ‘সবই তো  করে দিয়ে গেছো
এলেনা কেন ছেলেকে ছেড়ে’?
যত ঝক্কি এ বুড়োর,
নে, এবার সব গরম কর, পাতে তোল।


নিজে তো খালি ফোন করেই খালাস,
খাবার খেয়েছ?
প্রেসারের ওষুধ টা ভুলে যেওনা যেন...
ব্যাস!!


আমার হয়েছে যত জ্বালা।
কে যেন দরজায় ডাকছে এই ভর দুপুর বেলা।
দেখি, হবে কোন পূজোর চাঁদা।
ঠিক তাই, বলে গেল
এবার শত বছর চলছে,
তাই কিছু ডোনেশান লাগবে দাদা।


যাক, পূজো আসা মানেই তুমি আসা,
ভেতর ভেতর চাপ চাপ খুশি।
সে কথা ভুলেও তোমাকে জানাই না
মুখে বলি, তুমি ছেলের নজর রাখো বেশি বেশি।


ঘর তো এখন ‘তুমি’ ছাড়া ‘ইটের দেওয়াল’ মাত্র।
আমি ভাল আছি, সামলে নিচ্ছি সব,
তুমি তো জানো,
আমি চিরকালই একই রকম
তোমার ভীষণ ‘বাধ্য ছাত্র’।।