নিঃস্তব্ধ ঘর, দরজা জানালা বন্ধ
সূর্যের আলো জ্বলছে, গ‍্যাস জ্বলছে
বিশ্বাস পুড়ে যাওয়ার গন্ধ নাকে আসছে।
আপাদমস্তক বহু দিনের উপোস
বিষণ্নতা কুঁড়েকুঁড়ে খাচ্ছে পৌরুষত্ব।
ঘরময় থইথই করছে জল, কটা জলচর
জলঘরে বন্দি।
কিছু একটা মরেছে; পচা গন্ধ নাকে আসছে।
ভ্রম চেটে বুকে জমেছে ছাইপাশ,
চোয়া ঢেকুরে উতলে আসে প্রহসন।
সব ঘটে চলেছে নিজের মতো...
বসে সবে ভাবছি যেন মূর্তি
তাকিয়ে আছি যেন তক্ষক,
ঘুমিয়ে আছি যেন শব।


বাইরে বড্ড কোলাহল,
কানে বিনোদন, মুখে অভিযোগ নিয়ে ছুটছে।
বাজার জ্বলছে দাউদাউ করে
আগুনের আঁচে এসে পড়ছে ঘরে।
প্রতিবাদের চিতা জ্বলছে, বেশ ঝাঁঝালো গন্ধ,
সেই আগুনে জমে উঠেছে রুটি শিল্প।
ক্ষমতার পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা শ্বাপদের দল
কংক্রিটের জঙ্গলে মহামান‍্য।
চোর-ডাকাতের সমঝোতার জাদুখেলায়
সম্মোহিত মনের রঙ বদলাচ্ছে অজান্তেই।
কিছু নির্বোধ, কৈফিয়ৎ চেয়ে হয়ে উঠছে
অসামাজিক উপাদান।
কিছু ভ্রষ্টের শৌর্যশালী বিচরণ বইয়ের পাতায়।
সব প্রকাশ‍্যে ঘটছে, সাহসী হাওয়া বইছে।
আখের গুছিয়ে হাহুতাশ আওরায়
প্রতিবেদন চিবাতে চিবাতে।
অন্ধের ভান করে, মুখে কুলুপ এঁটে
কানে বিনোদন গুঁজে পৌঁছাতে হবে-
বরফ ঢাকা পাহাড়ের চূড়ায় কিংবা
গগনচুম্বি ফ্ল‍্যাটে,
সব সাচ্ছন্দ‍্য পকেটে ভরতে
কোথাও একটা পৌঁছতেই হবে।
শহুরে ধারাবাহিককের নেশায়
গেঁও দালানে নামে নাটুকে সন্ধ‍্যা।
কি অদ্ভুত পরিবর্তন, দোষারোপ করে ছুটছে।
স্বাধীনচেতা পোষাক পড়ে ঘুরে বেরাচ্ছে
আত্মকেন্দ্রিক দম্ভ, স্বেচ্ছাচারী অভ‍্যাস নিয়ে।
বাইরে বড্ড কোলাহল,
ঘিলুতে বেড়েছে আগাছার জট
যেন বস্তা ভর্তি রদ্দি নৈতিকবোধ।
হাসছি যেন মনগড়া, কাঁদছি যেন সর্বহারা
সান্ত্বনা দিচ্ছি যেন উন্মাদ।
আধপোড়া বিশ্বাসের শূন্যতা নিয়ে
নিজেকে খুঁজতে,
কিছু হাত মুখের সামনে তুলে ধরে
সুযোগের উপহার,
বলে পারো তারাই দূত কিম্বা ঈশ্বর।


নিঃস্তব্ধ ঘর, দরজা জানালা বন্ধ
একটা ঘরে আলো জ্বলছে,
অন‍্যটা অন্ধকার।
এঘর ওঘর করছি, আতঙ্কে শ্বাস নিচ্ছি।
বসে বসে ভাবছি যেন জড়
তাকিয়ে আছি যেন অপদার্থ
ঘুমিয়ে আছি যেন আবর্জনা।