টিপ টিপ করে ঝরা মেঘলা বিকেল, কেড়ে নিয়ে গেছে যত আলো
পাতাগুলো ভিজে ঝুঁকে আছে , ঝুঁকে গেছে ঘর ঝুকেছে বিশ্বাসেরাও,
মাথা হেঁট হয়ে আছে , কোনও কাজ যে জুটলোনা আজও।


কাদা জলে একাকার সরীসৃপ আকৃতির ওই খোলা নালাটার ধারে
সার সার ঝুপড়িতে জ্বলে উঠেছে জোনাকিরা টিম টিম  করে বাতিদানে,
আধো আলো অন্ধকারে এগিয়ে চলেছে ওরা কোনও এক আলোর সন্ধানে ।
সারি সারি হেঁটমুন্ড জীবন্ত লাশের মিছিল চলেছে এগিয়ে,
এগিয়ে চলেছে ওরা আধো আলোছায়া ঘেরা শুঁড়িখানাটার আপ্যায়নে,
একটু নিঃশ্বাস নিতে একটু বা ছুটি পেতে এগিয়ে চলেছে ওরা পায়ে পায়ে ।


মনে পড়ে বার বার ছেলের খেলার ব্যট, মেয়েটার লাল ফিতে স্কুল-ব্যগ,
আর ওর জন্য একজোড়া পায়ের নূপুর!!
হুঁঃ - দুর শালা ... পারেনা ভাবতে আর মন,
ঢেলে দেয় তরল নেশা ওই গলার ভিতর,
ডুবে যায় একরাশ উগরে দেওয়া বিড়িটার ওই ধোঁয়ার জটাজালে।


ওদিকে এক কোণে খোঁচা দাড়ির ফাঁকে চাতক দৃষ্টিতে আছে বসে,
পারেনি দুটো ক্ষুদও এনে দিতে, ধার শোধ করে
ঘরে আজ দুই দিন পাঁচটা উদরে নেই ভাত,
তরল গরল দেয় ঢেলে, খালি পেটে হাত চেপে ধরে-
নোনাজলেরা যত বাষ্প হয়ে ওড়ে ...


রাত বাড়ে, বাড়ে জীবন্ত লাশের মিছিল, আকাশচুম্বির পিছে ওই কাদাজল পথে
টিম টিম করে শুধু আলোগুলো জ্বলে নিঃশ্ছিদ্র অন্ধকার রাতের গভীরে
বেড়ার ফাঁক দিয়ে যত স্বপ্নগুলো - ধোঁয়া হয়ে ওড়ে।
রাতের বাতাস হয় ভারি, ঝুপড়ির ধোঁয়ার ভিতর ওঠে অসহায় আর্তনাদ
নিঃশব্দে ওরা বলে যায় - ওরে তোরা যে আমার, বড় প্রিয় তোরা ওরে ...  
=========================
অমিতাভ (২৪.৮.২০১৫)বাড়ি, বিকেল ৭-০০