চারিদিক শুনশান নিঃশব্দ জনহীন  ঘন বনপাহাড়ি
বসে আছি আনমনে  নিস্তব্ধ নিঝুম রাতে বনের গভীরে
এক আকাশ উজ্জ্বল নক্ষত্র মন্ডলের নিচে রাত্রি গভীরে,
বিস্তৃত বনভুমে একমুখ হাসি নিয়ে কোজাগরি চাঁদ দেয় উঁকি,
মধ্যগগণে ওই তারাদের সাথে রাত্র নিশীথে -
শাল শিরীষ আর মেহগিনিতে ভরা ঘন জঙ্গলের মাথার উপর ।
নিস্তব্ধ রাত্রির বিস্তৃত বনভুমি জোৎস্নালোকে যায় ভেসে
কুল কুল করে বয়ে চলা সুবর্নরেখার দুই তীর।
ভরা জোছনায় রূপোলি ঢেউগুলো সশব্দে বয়ে চলে উচ্ছলতায়,
উদ্ভিন্ন যৌবনা এক বেপরোয়া ষোড়শীর মত,
মৃদুমন্দ বাতাস শিস দিয়ে চলে যায় গাছেদের পাতায় পাতায়।


মায়াবিনী রাত পায়ে পায়ে এগিয়ে চলে নিশুতির ডাকে
হাসনুহানা আর মহুয়ার মাঝে - মাতাল নেশায়।
অদুরেই বাঁশের বনে আলো ঝলমল - জোনাকীর আনন্দমেলা,
যেন এক দেওয়ালির রাতে জ্বলা হাজার তারাবাতি।


ঝিঁঝিঁর ডাক, নাম না জানা কোনও পাখির একনাগাড়ে শিস
আর তক্ষকের বিরামহীন চিৎকারে -
তৈরি হয় এক অদ্ভুৎ আবহ সঙ্গিত,
যেন এক সুরেলা ‘মুনলাইট সোনাটা’ ...
এক ফালি স্বর্গ যেন নেমে আসে রাতের নিস্তব্ধতায়
আলো আঁধারিতে ঘেরা মোহময়ী সুবর্নরেখার দুই তীরে –
নির্জন বনভুমে রাত জোছনায়।


আনমনা মন আমার বেড়ায় ভেসে ভেসে
নিঝুম চাঁদনি রাতের নৈসর্গিক আতিথেয়তায়।
দূর হতে ভেসে আসে মন মাতাল করা  -
মাদলের দ্রিমী দ্রিমী  সুরেলা ধবনি ...
ডুবে যাই বার বার নিজেরে হারাই
অনির্বচনিয় ওই রাতের মায়ায় – ভরা জোছনায়
আলো আঁধারিতে ঘেরা সুবর্নরেখার তীরে –
নির্জন বনভুমে রাত জোছনায়।
==========================
অমিতাভ (১০.০৬.২০০৯)ঘাটশিলা, রাত ২-৩০


** এক বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লেখা অনেকদিন আগের এই কবিতাটি হটাৎ হাতের কাছে পেয়ে আজ পোষ্ট করলাম। গভীর রাতে ওই জঙ্গলে বসেই লিখেছিলাম। আপনারা কে কেমন উপভোগ করলেন জানাবেন।