এ’সময় বুঝি এক পচনের কাল
গঙ্গা পদ্মা হোয়াংহো কিংবা রাইন ,
বয়ে নিয়ে চলেছে গলিত সভ্যতার
পুতিগন্ধময় যত পুঁজ রক্ত আর বেদনা মলিন ।
আর্তের কান্নারা ডোবে স্বখ্যাত সলিলে
ফুঁসে ওঠে বাসুকি নাহয় ড্রাগনের বিষ ।


মনুষ্যত্ব?
সে তো আজ লুপ্তপ্রায় ইতিহাস
আমাদের আধুনিক পৈশাচিক ভাবনার ডোরে,
হারিয়ে গিয়েছে যত মানবিক চেতনা
মূল্যবোধেরা হয়েছে বিগত ।
মুখোশের আড়ালে অধিষ্ঠিত এক সমাজ বিকৃত ।


কংস দূর্যোধনেদের আজ রাজ রাজ্যপাট
শুম্ভ নিশুম্ভরা সেনাপতী ।
চারিদিকে কোলাহল রক্তবীজের দল আজ্ঞাবহ ওরা রাজার দুলাল !
মঞ্চে কিংবা গৃহকোণে কত যে দ্রৌপদীরা
অবিরত হারায় বস্ত্র লজ্জা আর মান ।
মনুষ্যত্বের লাঞ্ছনা - হয় অপমান ।


সুগন্ধি আতর ছড়ানো মসলিন বস্ত্রের নিচে
তীক্ষ্ণ নখরযুক্ত লোমশ হাত আর শানানো খঞ্জর সুরক্ষিত,
হায়নার ক্ষুধা নিয়ে খুবলে খায় ওরা দৈত্যোল্লাসে -
নারীর নরম মাংস দেহ , সযত্নে রক্ষিত ইজ্জত যত ।
ধম্ম দল, জাত পাত, আর  সাদা কালো চামড়ার কোন্দলের গুটি সাজিয়ে
খেলেই চলেছি ওরা সাপলুডো - সাথে রক্তের হোলি উৎসব ।


ছাইচাপা মানবিকতা আজ বুহুদিন হয়েছে আবৃত পুরু বল্মিক স্তুপে  
অনভ্যাসে আজ বিস্মৃতপ্রায় মনুষ্যত্বের অবয়ব ও ব্যবহার ।
রক্ত নারী আর লুটের নেশায় ভুলেই গিয়েছি যেন কবে
আমরা সমাজবদ্ধ - দায়বদ্ধ এক মনুষ্য প্রজাতি !!


নির্যাতিতের কথা শোনা যায় বড় নিচুস্বরে অবহেলা ভরে
নির্যাতন চলে বেপরোয়া সোল্লাসে, নির্লজ্জ বেআব্রু হয়ে ।


হাঃ বলতে দুঃখ হয়, লজ্জিত হতে হয়
আজকের স্লোগান বুঝি -
“লজ্জা সমিহ ভয় তিন ব্রাত্য শব্দ আর কখনই নয়,
হারে রে রে  করে ওরা আগুন জ্বালিয়ে বলে
হোক নরবলি আরও – আরও অনাচার
নারকীয় উল্লাসে হোক আরও রক্তক্ষয় ।“


এ’সময় বুঝি এক পচনের কাল
গঙ্গা পদ্মা হোয়াংহো কিংবা রাইন,
মিলে মিশে সব একাকার
বয়ে নিয়ে চলেছে রক্তাক্ত পচনশীল এক অসুস্থতা ...
========================
অমিতাভ (২৮।৫।২০১৫)বাড়ি, দুপুর ১২-১৫