-উঃ বাইরেটা আজ কি অসহ্য অন্ধকার কালো
একে তো অমানিশার রাত তার উপর বিদ্যুৎ বিভ্রাট,
মধ্যরাতে নেই কোনও আলো।
পাশাপাশি শুয়ে আছি– তবুও যায়না দেখা মুখ হাত  শরীরের ঢাল
কি অসহ্য এই শহুরে অন্ধকার !
-আরে শুনছো? বাইরে দরজার কাছে মৃদু পায়ের আওয়াজ
ফিস ফিস করে ওরা কারা কথা বলে?
-এই চুপ, কোনও কথা বোলোনা, দাঁড়াওতো শুনি !
-একিঃ এতো নারী কন্ঠের আর্তনাদ, শম্পা না?
পাশের ঘর থেকে আমাদেরই মেয়ের?
অন্ধকারে হুড়মুড় - ছুট্টে যাই বেসামাল হয়ে পড়িমরি করে
দেখি হাঁ করা দরজার কপাট - নিশব্দ পাশের ঘর,  শম্পা নেই ঘরে।
মুহূূর্তের ধস্তাধস্তি রাস্তা হতে কানে আসে সুতীব্র চিৎকার  
মা মাগোওও  বাবা বাঁচাও... বাঁচাও..... ব্যস সব চুপ!
-শুনছেন আপনারা প্রতিবেসি সব
উঠুন, বেরিয়ে আসুন, বাঁচান না আমাদের মেয়েটাকে ...
স্বামী স্ত্রীর আর্তনাদে  কেঁপে ওঠে রাত –


একটা জানালাও খুললোনা কেউ,
নব চেতনায় উদ্বুদ্ধ আজকের আধুনিকতা !!
হুস হুস - বিকট আওয়াজ করে বাইকগুলো যত
তারই পরে শ্মশানের নিস্তব্ধতা
কান্নারা হারায় রাতের অন্ধ গলিতে,
নিরালা পুষ্করিনীর জলে ছোঁড়া ঢিলের মতন
একটু আন্দোলন ক্ষনিকের ঢেউ - পরক্ষনেই নিশ্চুপ মসৃণ জলতল।


তবে কী এই নব্য নাগরিকেরা সবাই - শুধু অভিনেতা?
হাওয়ারা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্ধকার রাত্রির বুকে ...
আম খাও - আঁটি গাছ সার জল ঘাম ... ওরা আবার কে?
খাও নাও হাঁট চলো শুধু গোছাও নিজেরে ... প্রতিবেশী? সে আবার কী?
অন্ধকারে নিমগ্ন এই রাত - বুঝি পড়ে রয় কোনও নিষিদ্ধ গহ্বরে ...
ঘুণপোকা আর বিষাক্ত বিছা বুকে নিয়ে।


একবিংশ শতাব্দীর এক আধুনিক শহর - কেমন বোবা নিশ্চল,
জমেছে অনেক ক্লান্তি আর ভুলভ্রান্তি সকল
সব চুপ নিশ্চুপ পথের দুধার
সারি সারি বাড়ি নিয়ে ঘুমায় শহর - অন্ধকারে ডুবে
আধুনিকতার ছত্রছায়ায় এক আদিম উল্লাস নিয়ে পেটে ...
==========================
অমিতাভ (৩১.১০.২০১৫)বাড়ি, রাত ১২-৪৫