ভিখিরি এক পথের ধারে
গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে ,
প্রায়শই দেখি তারে
ইতি উতি পথের ধারে,
ভাঙ্গা গলায় গান গেয়ে সে
হাত বাড়িয়ে ভিক্ষে করে ।


কেউ বা দিল দু চার আনা
বাকিরা রয় মুখ ঘুরিয়ে ।
আমিও সেই ঘোরার দলে
হাত বাড়ালেই মুখ ঘূরিয়ে
চুপ করে রই হাত গুটিয়ে ।


এমনই এক অফিস ফেরত সন্ধ্যাবেলা
দেখি- ভিখিরি ঐ পথের ধারে ,
ঝোলার থেকে বের করে সে
তোবড়া ভাঙ্গা পাঁচটি থালা ,
সারা দিনের কুড়োনো খাবার
সমান ভাগে ঢাললো সে তার
ওই তোবড়া ভাঙ্গা পাঁচটি থালায় ।


জানিনা কখন যে কোথা থেকে
জুটলো এসে কুকুর বেড়াল ,
তিনটে কুকুর একটা বেড়াল
আর একজনা ওই ভিখিরি নিজে –
গোল হয়ে সেই পথের ধারে
বসলো খেতে পাঁচ জনাতে ।


থমকে দাড়াই পথের ধারে
তড়িতাহত হয়ে,
দেখি তৃপ্তি করে খাচ্ছে ওরা
পাঁচজনে ঐ পঙক্তি ভোজে ।
স্বর্গ যেন এল নেমে
ধুলোমাখা ঐ পথের কোণে।


মুহুর্তে সব এলোমেলো
প্রশ্ন জাগে মনের কোণে
কে ভিখিরি এই সমাজে ?
মাথা আমার পড়ল নুয়ে
ওই ভিখিরি আর ভাঙ্গা থালায় ,
চুর্ণ করে ধ্যান ধারনা
যত দর্প গর্ব এই জীবনের ।


সুক্ষ বিচার বাঁচার লড়াই
নিয়ম নীতি ভক্তি বড়াই
পড়াশুনো জ্ঞান গরিমা
সব কিছু আজ চুর্ণ হল
ওই পথের ধারের পাঁচটি থালায় ।


কে ভিখিরি এই সমাজে ?
ওই হাত বাড়িয়ে ভিক্ষে-চাওয়া
ছেঁড়া ঝোলায় দীন ভিখারি ?
নাকি সুটেড বূটেড মুখোশ পরা
আমার মতন হঠকারী ???
===================
অমিতাভ(২।০১।২০১৪ )


** কবিতাটি আমার ব্যস্ত কর্মরত দিনগুলোতে এক বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লেখা।