পাগলি মেয়ে, ঝরা-পাতা শব্দ তুলে কথা বলে
গভীর রাতে তারার দিকে তাকিয়ে দেখে উল্কা পতন
বনে বনে শিষ দিয়ে সে উড়ে বেড়ায়
জোনাক দলে পাখা মেলে বনে বনে জ্বালায় আগুণ
ঠোঁট বিলিয়ে আলাপ করে জ্যোৎস্না আলোয়
বট বৃক্ষের ঝুরি ধরে দুলতে থাকে পেঁচার সাথে
সমাজ ছেড়ে সুখ খোঁজে সে পশুপাখি, গাছের কাছে
দিনের আলোয় অন্ধ চোখ পষ্ট দেখে গভীর রাতে
কোন পাখি টার বাসা ভাঙ্গা, কোন খরগোশ বাচ্চা দেবে
কোন ফুলটির গন্ধ বেশি কোন মুকুলটি মেলবে কবে
কোন ডালটি ভাঙলো ঝড়ে কোন ফুলটি গেলো ঝরে
বন কি শুধু, আকাশ সুদ্ধ ঢুকে পড়ে চোখের মধ্যে
অন্ধকারের গন্ধ গুলো নাকে ঢোকে,
পাতার গন্ধ, ফুলের গন্ধ, শিশু পাখির গায়ের গন্ধ
শিশির ভেজা ঘাসের গন্ধ, বৃষ্টিভেজা মাটির গন্ধ- সুখ পায় সে
আরেক গন্ধে কষ্ট কেবল গলা খেঁকে বমি করে
ভুলতে চায় সে মাটির দিকে দৃষ্টি গুলো চাপা দিয়ে
যে-দেখা তার মানুষগুলো তাদের থেকে পালিয়ে বেড়ায়
কুকুর বিড়াল গরু ছাগল সবাই যেন মিত্র তার
পুরুষ গুলোর ভয়ে কেবল ভালবাসে অন্ধকার
পাটপচা কাদামাটি গায়ে মেখে পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকে
কেউ কেউ তারে ডেকে এনে কাঁসি ভরে খাবার দেয়
এলোচুলে কালো মেয়ে, লোকে তারে পাগলি বলে-
কেউ বলে তার বাবা ছিল না, মা মরেছে শিশুকালে
কেউ বলে জ্বীন-পরী সে, সাদা ঘোড়ায় উড়ে বেড়ায়
কেউ বলে সে সাদা বকের বেশে নাকি জ্যান্ত পুঁটি ধরে খায়
কুয়াশা চাদর জড়িয়ে বুকে সবুজ ক্ষেতে হেঁটে চলে
পাগল মেয়ে হেসেই মরে, রক্ষে লোকে তারে পাগলি বলে।