এই ! এদিকে এসো! হাত ধরো হাতে !
উপরে তারার আকাশ মাঝখানে পাহাড়
নেমে আসা হাজার বাতি মিটমিট জেগে আছে
তিন নদীর শহর পাশোতে। রাতের বারেতে ফেনাউঠা বেয়ারের বন্যা
প্রবীণ হুইস্কির পবিত্র গন্ধ, ভদকার তীব্র আবেগে
ভিজে যৌবন ডুবুডুবু, উদ্দাম নৃত্তের ছন্দে উল্লাস
সাক্সোফনে ন্যাট কিং কোল – because you love me
এসো হাত ধরি, উৎসবে নেচে গেয়ে মেতে উঠি, দানিউব ।
খুব, খুব করে নেয়ে ভিজে ভেসে যাবো আজ তোমার সাথে
ওদিকে গহীন বন, বাদামি ভাল্লুক লাল বল্গার ডাক
নিঃসঙ্গ বেঁচে থাকার প্রেমহীন চিৎকার
কোন গল্প নয়, পাশাপাশি দুজন, মুখোমুখি ক্রজ থেকে নেমে
গভীরে সাঁতার কাটবো অনুভবে ।
পাহাড়ের ঢল বেয়ে সবুজ হলুদ লাল তামাটে গাছ নেমে গেছে জলে রঙিন বাগান
মাক্সিকান হ্যাট ইংগেলম্যান ডেইজি পারপেল হর্স নেটল ব্রিয়ের আর ইয়ারোর সাথে
ঢলাঢলি ইয়ার্কিতে ঢলাঢলি মেতে উঠেছে ইনডিয়ান ব্লাঙ্কেট । তারি ফাঁকে ফাঁকে
এপারলোঁ কারফে স্টারজিওন বার হরেক মাছ
শিকারের ভিড়ে হাজার পালিকান
মানুষের পাশাপাশি কী অভিনব বসতি তাদের ভালবাসার
বাড়িতে ছাদে কার্নিশে টকাটক ঠোঁটের টোকায় বেসুরো তবলার সুর
সুদূর আকাশে কালোমেঘ চিরে রূপালি উদ্বাহু রোদ সুন্দর
পাহাড়ের চুড়ায় গির্জার শিখরে বিঁধে থাকা মেঘ যীশুর যন্ত্রণার
আনন্দ বেদনার সবস্মৃতিশোক-স্রোত তোমার বুকে
এখানে তোমার বিনীত বিশ্রাম সমাহিত রূপ প্রশ্নে ব্যাকুল
ক্রোশিয়া হারসোগোভিন বসনিয়ায় তুমি কোন প্রিয়জনকে হারিয়ে কাতর চিৎকারে
প্রশ্নদ্বীপ সেই সৃষ্টি থেকে – আমি জানি না। কিন্তু তোমার প্রাণের সেই ক্রন্দন কলকল তান
কান পেতে শুনছি সপাঁর পিয়ানোয়।
জলের অন্ধকারে
সাঁ স্তেফেন গির্জার সাজানো মোমবাতি ঘিরে
হাজার লক্ষ কফিন তোমার বুকে ভরে বসে আছো বুদাপেস্টের পার্লামেন্টে
কার কাছে মিনতি এই বিচারের, দানিউব ?
সেই বিশ্বযুদ্ধের রক্ত বুকে এখনো তুমি কেঁদে ব্যাকুল !
এসো । বেঁচে থাকার এই আলোকময় সুন্দরে আমরা বিশ্রাম নিই
সারবিয়ায় গ্লুবাক দুর্গের পাশ দিয়ে যেতে যেতে বন্য রাজহাঁস আর গাংচিলের সাথে
প্রাতরাশ সেরে যেই না তুমি নূপুর পায়ে নেচে যাও-
সভ্যতার সমস্ত দুর্গন্ধ ময়লা জমাট বেঁধে চিৎকার পাড়ে তোমার বুকে
তুমি আগলে ধরো ধরণী পরম মমতায়, দুকুলে বেঁটে দাও
জননীর হাতভরে শুদ্ধ তৃপ্ত জল
ক্রশিয়া স্লাভনি রোমানিয়ায়
তুমি দোনাও তুমি দুনাজ তুমি দুনা তুমি দুনাভ
দুনারিয়া দুনাই নিশব্ধে বয়ে যাও
গভীর ধ্যানস্থ অন্তস্তলে নিঃশব্দ মহিমায় উদাস
প্রশস্ত প্রজ্ঞায় পাহাড়ের গায় দেসেবালুসের দীর্ঘমূর্তির পাশ দিয়ে
বুলগারিয়া থেকে ব্লাক সী।


তোমাকে যতো দেখি ভরে ওঠে বুক আনন্দ বেদনা ও হতাশায়
দুহাতে করুণাভরে তুলে দিলে এতো জল এতো দেশ এতো মানুষের
শিক্ষা তবু নিলোনা আমাদের দেশ দুর্বৃত্ত দল
নীরবে ভেসে যায় কান্নার নোনা জল গভীর ভাবনায়
গঙ্গা পদ্মা মেঘনা ও যমুনায় !