কায়েনের মধ্যযুগের সাঁ পিয়ার গির্জার উলম্ব ফলকে বিঁধে থাকা থোকা থোকা মেঘ মুছে দিয়েছি আজ। ক্যামি ক্লোদেলের উন্মাদনা নিয়ে ছুঁড়ে দিয়েছি সেইনে রেনোয়ার আঁকা তোমার মুখের আদল। তন্ন তন্ন করে খুঁজে খুঁজে ছিঁড়ে ফেলেছি সযত্নে সাজানো আমার বড় প্রিয় নানান ভঙ্গির যতসব তোমার ছবি। দীর্ঘ বছরে আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমাদের জীবনের যা-কিছু শৌখিন অশৌখিন ছিল, ক্যাথরিনা দিয়ে ঝাঁটিয়ে পরিষ্কার করেছি সব। দিগন্তব্যাপী সবুজ বনে জ্বালিয়েছি আগুণ দাউদাউ। আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে তারা। সমুদ্র উথলে সুনামির তুফান।  


আকাশে বাতাসে বনে বনে যে সানাই বেজে চলেছে অবিরাম, ফুলের দোলে দোলে মধু পেতে মৌমাছির নাচন, উথল জলের ঢেউয়ে ঢেউয়ে রঙিন মাছের উল্লম্ফন, বিরামহীন সুর মূর্ছনায় মাতাল ঝর্ণা, সব বন্ধ করে সমুদ্রের তীর ধরে অন্ধকারে দ্রুতপায়ে হেঁটে চলেছি অগন্তব্যের পথে।

তবু চৌচির মাটি ফেটে উঠে আসছে ভকভক ধোঁয়া। বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠের বুকে জমে উঠছে ঘন কুয়াশা। বকের দল উড়েছে দুরান্তে। অস্তমিত সূর্যের কিরণে রক্তরাগ আলাপ। সমুদ্রের বুকে ঢেউ আর ঢেউ উথালপাথাল। এলোমেলো বাতাসে ডানামেলে কী বিশ্রি বিকট চিৎকারে হাজারো গাংচিল !


দাঁড়িয়ে আছি, না হাঁটছি- সবিস্ময়ে ভাবি। হলুদ রঙিন পায়েপেষা শরতের পাতায় মেঘের  ছায়ায় অসমাপ্ত বিহাগ ছাড়া অবশিষ্ট কিছুই দেখিনা আর!