হ্যাঁ আমার ফেইসবুক টাইমলাইন সম্পর্কের আবরণের দাগ টানলাম সিঙ্গেল রেখে।
এটা অবশ্য ঠিক যে আর কোন ওয়েটিং কল তোমায় তাড়া করবে না।খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গানোর প্রিয় মানুষ টি নিয়ম করে আর ঘুম ভাঙাতে আসবে না আমার তথাকথিত কোন গার্লফ্রেন্ড।


যেটা এক সময় খুব বাদ দিয়েছিলাম, অসহ্য লাগতো সেটা আজ আমার প্রিয় সম্বল হয়েছে এক ঘড়ির এলার্মের শব্দে বা মা বাবার উচ্চস্বরে বকাবকি,সেটাই খুব ভালো লাগে।


চিন্তা দুশ্চিন্তার ভার মোটেও আর বইতে হয় না, সব যে রিসাইকেল বিনে ফেলে দিয়েছি।বলতে গেলে চিন্তা শব্দ টি একেবারে ডিলিট করে দিলাম আমার
পৃথিবীর অভিধান থেকে।


টেনশন..???
তুমি চলে গিয়েছো বলেই টেনশন দূর হয়েছে।
তুমি চলে গিয়েছো বলেই খুব ভালোই আছি।
উফফ.!! হাফ ছেড়ে বাঁচি।


মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে ভয় ভয় ভাব দূর হয়েছে।
ওমা.. গুড নাইট উইশ করলাম তো?
প্রতিদিনকার রুটিন মাফিক শুভকামনা
জানিয়েছিলাম তো?
ভালোবাসি বলেই কি এতোই ভয়?
একান্ত নির্ধারিত ঐ লাভ রিয়েক্ট পাঠালাম কি না ভেবে মরে যায় যায় অবস্থা।


হঠাৎ ঘুম ভেঙে চুরমার হয়ে যায় যখন,চোখ বন্ধ না হওয়া অবধি একটু খানি অনলাইনে প্রবেশে তুমি দ্যাখো নি তো.?
ফেইসবুকে কারো প্রেমের পোস্টে মেনে না নেওয়া ইমোজি বা কমেন্ট করাটা দেখে ফ্যালে নি তো.?
এই যা..!! সন্দেহের চূড়ায় উঠে আছে কি আমার  গার্লফ্রেন্ড??


এসব আশংঙ্খা এখন দূর হয়েছে, নিজেকে খাঁচা বিহীন পাখির মতো মুক্ত করলাম।যাক বাবা ধন্যবাদ টা পাওয়ার যোগ্যতা তোমার থাকলেও তোমায় এমন শব্দের বাঁধনে আমি বাঁধবো না।দিক দিগন্তের ওপাড় থেকে এপাড়ে এসে শান্তি নিকেতন চিনেছি এই আমি।
কয়েকটা বছর পর বুঝতে পেরেছি জানতে পেরেছি,
এই একা থাকাটা কতটা ভালো।


এখন তোমাকে মেরুন রঙের শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে গোল্ডেন কালার ব্লাউজ বা সাথে খোলা চুল অথবা কপালে টিপ পড়তে বলবো না। বা না পড়লেও  চোখে ছানি পড়বে না, চোখে জ্বালাপোড়া অনুভূতি হবে না।


বরাবরই আমার মাইনাস 5 চশমা পড়া চোখের দৃষ্টি তে তোমায় যেমনটি ভালো লাগতো সেটা আর ভালো না লাগাটাই আমার মুক্তি।
দূরের নক্ষত্র দেখা অনেক ভালো।
কাছের জনকে তো এতোটা দিন দেখে আসলাম,
কাছের জন কে পৃথিবী ভেবে এই যা অবস্থা।


কাল্পনিক আলোর পর্দা সরিয়ে বিশাল শূণ্যতা অনুভব হলেও, নতুন সকাল টাকে অনুভব করছি।
পূর্বের সূর্য কে দেখছি, কি যে শান্তি সেটা না বলাই থাক।


হ্যাঁ বাসের যাত্রীর ভিড়ের মধ্যে তোমার গায়ে কারো একটু খানি আলতো স্পর্শ লাগলেই আমার যে খুব খারাপ লাগতো, সেটা আর লাগবে না। তবে বেশ ভালো লাগতো মুখস্থ না হওয়া নিউটনের সূত্র গুলো ভুলে গিয়ে পাশাপাশি সিটে বসে আঙ্গুলে আঙ্গুলে ভীষণ দুষ্ট মাখামাখি মুহুর্ত গুলো।


কখনো তো পথচারী শিশুদের সাথে মেলামেশা হলো না, যাক ঐসব মুহুর্তের ধূলোপড়া থেকে এখন একটু স্বাদ নেওয়া যাবে কোন অনাথ আশ্রমের বা বৃদ্ধাশ্রমের মানুষগুলোর সাথে।
তাতে খারাপ বা ক্ষতি কি.?
তাদেরও তো ভালোবাসা প্রয়োজন।


তোমার আবেদনময়ী চোখের ইশারায় আমায় বোঝাতো তোমারও খুব চুমুর প্রয়োজন।এখন আর বাড়ি ফেরার সময় চোখে মুখে ঠোঁটে  চুমুর সুগন্ধ টা দূর করা লাগবে না কোন নামি দামি ব্র্যান্ডের স্প্রে দিয়ে।রাতভোর মোবাইলে চুম্বনের চম্বুকের আবদারের প্রহর শেষ হলো।কানে কানে শুরশুরী দেওয়া ঐ তুমি টাকে আর নাই বা রাখলাম জীবনে।


জন্মদাত্রী মায়ের মন খারাপের সময় পাশে না থেকে তোমার রাগের পাহাড় ভাঙ্গতে হতো।কি অদ্ভুত ভালোবাসা দ্যাখো.!!
সে দিনের দিনক্ষণ গুলো কেন মা কে দিলাম না সেই ভেবে নিজেকে অপরাধী মনে হয়।
এখন রাগের মুহুর্তে মা কে জড়িয়ে ধরে হাসিমুখে কথা বললেই মা মুখে ভাত খাওয়ায় দেয়।


শুনেছি পড়েছি বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুর মাতৃ কোলে।
যে যেমন যা যেমন তাকে তেমনি শোভা বর্ধন করে।
হুমম একা আছি ভালো আছি বড্ড ভালো লাগছে এখন।


প্রিয় মুভি দেখা শেষ করে রেস্তোরাঁয় বসে ডিনার সার্ভ করা সেলফি তোলা কি খুব প্রয়োজন??
আরে ক্ষুদার্থ আমার পাকস্থলীতে খাবার প্রয়োজন।শুধু শুধু ক্যামেরায় বন্দী করে ডিনাররের সাথে ল্যান্সের বন্ধুত্ব পাতানো এখন এবার থামবে।


যাকগে ওসব কথা, এখন অনন্ত অনিবার্য আলিঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত করলাম।তোমার অনর্গল কথা থেকে  আমার মোবাইলের চার্জ রক্ষা পেলো,হবে না আর মোবাইল চার্জে রেখে কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে কথা বলা।


কোথায় আছি কেমন আছি
গোছালো নাকি অগোছালো আছি,
সেটা আর কোন হঠাৎ ভিডিও কলে দেখা বন্ধ হলো।
তোমার ইচ্ছে কত আবদার বাহানা নিয়ম করে বন্ধ হয়েছে এবার।


একা থাকর পরশপাথর খুঁজতে বেশ সময় লেগেছে।
তুমি থাকো তোমার তুমি হয়ে,
আমাকে না হয়, আমার আমি হয়ে থাকতে দাও।
একা থাকার মধ্যে আমি বেঁচে থাকবো,
এই আমার আমিই হয়ে।
ভালো থেকো তুমিও...!!!!!
***********************
২৮ই অক্টোবর ২০২১।