জানো  চারুলতা, যেদিন তোমায় দেখেছিলাম শিউলি ফুল নিয়ে হাতে,
শীতল পাটির শীতলতার মতো মনে জেগেছিলো প্রশান্তি।
আজো মনে পড়ে, বলেছিলাম
একটু সাবধানে যেও,
ভুল করে যেন নজর না দেয় কেউ।


চারু, তুমি জানো কি?
তোমার জন্য আমি এখানে বসে
ভূস্বর্গ কাশ্মীর রচনা করতে পারি।
তোমায় বাধহীন ভালোবাসায়
বেঁধে রাখতে পারি সারাজীবন।
তেমনই আমার ভালোবাসার সূচনা হয়েছিল তোমার প্রতি,
নিশ্চয় মনে আছে।


খুব সুন্দর পৃথিবীতে একজোড়া
প্রজাপতির ডানা মেলেছিলো,
একবুক ভালোলাগা ভালোবাসা নিয়ে।
সেই চারুর প্রেমে আমি দিনের পর দিন লতার মতো বেয়ে জড়িয়ে থাকতাম।
খুব ভালোবাসে নাম দিয়েছি
চারুলতা!!!!


হঠাৎ,
সিঁদুরে আকাশে মেঘে জমে অন্ধকারাচ্ছন্ন।
তোমার বিরহে থেকে কাতর আমি।
সৃষ্টি হয়েছিলো সময়ের স্বভাবে মন সাগরে গভীর নিম্নচাপ,
প্রবল ঝড়ের বেগ শরীরের আনাচে-কানাচে আছড়ে পড়বে জানা ছিলো না, তোমার দেওয়া বিরহের তাপ।


মেঘের ঘন ঘটায় ঈশান কোণের
মেঘ তীব্র থেকে তীব্রতর, ভয়াবহ রূপে রূপান্তরিত।


হে চারু, তোমায় আঁকড়ে ধরে
ভয় কাটানোর অপেক্ষায় আমি,
রুখে দাঁড়ানোর কথা দিয়েছিলে।
এখন আমি এই হৃদয়ের ঝড় সামলাবো কি করে?
দিশেহারা হয়ে পড়লাম, পাগলের
মতো ছুটে চলি এদিক ওদিক একাকী নির্জন রাস্তায়।


আহত পাখির মতো
শুধু চিৎকার করে বলে যায়
চারু আশ্রয় দাও..!!! চারু আশ্রয় দাও..!!! চারু আশ্রয় দাও..!!!


আমি নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে চেয়েছিলাম তোমার ছেঁড়া মলিন শাড়ির আঁচলে।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখো-
আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে,শুনে, বুঝে,
তুমি নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করলে
কোন এক নাম না জানা
আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে।


এতই যখন প্রাণপণ ইচ্ছে ছিলো
তবে কেন শিখিয়েছিলে আমাকে
ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হতে?
একা ফেলে রেখে চলে যাবে
কখনো ভাবি নি।
ভাবি নি এক মুহূর্তের জন্যেও
তুমি পালিয়ে বেড়াবে।


আমার মনের কূলে উপকূলে
এত গভীর নিম্নচাপ নিয়ে বাকি জীবন টা একা লড়ে যেতে হবে,
তাই না.?


বিরহের ঢেউ গুলোর আঘাতে
মন প্রাচীরের বাঁধ ভাঙ্গলো অবশেষে।
পেলাম না কোন কূলকিনারা।
আমি কেন-বা তোমার প্রেমে পড়লাম
জানি না, হয়তো ভালোবাসা এমনি হয়ে যায়, দেখা অদেখায়, জানা অজান্তে।


দীর্ঘকাল পরন্তু দীর্ঘশ্বাসে
অনুবাদক হয়ে বড্ড তৃষ্ণা নিয়ে
কালি কলমে  অনুবাদ করেছি তোমায়,
ভালোবেসে আজ একা আমি
একরাশ উদাসীনতায়।


🌹🌼🌹🌼🌹🌼🌹🌼🌹🌼🌹🌼🌹🌼


১৫ই জুলাই ২০২১।