বহুদিন গেলো বহুকাল গেলো
চোখের কোণে জল ঘড়িয়ে পড়ে নি।
আজ আমি দিব্বি হাসতে পারি।
মনে রাখি নি, শেষ কবে
তোমার জন্য চোখের পাপড়ি গুলো ভিজেছিল।
যদি কখনো গভীরভাবে ভাবতে বসি
মনে পড়ে,
হুম খুব মনে পড়ে সেদিনের কথা।


সেদিন কোনো মেঘলা আকাশ
কাঁদে নি আমার জন্য।
সেদিন থেমে থাকে নি কোনো,
সুরেলা কোকিলা কণ্ঠীর গান।
সেদিন থেমে থাকে নি নূতনত্ব
প্রেম কুঞ্জে বসবাস করা
প্রেমযুগলের হাতে-হাত ধরে
সন্ধ্যাবেলা রাস্তার ধারে হাঁটা।
সেদিন থেমে থাকে নি
চন্দ্রিমা উদ্যানের শত শত
লাভবার্ডসের চুম্বনের বিরতিহীন
সুবর্ণ এক্সপ্রেস।


শুধুমাত্র সংযমে আমিই কেঁদেছিলাম।
সেই অলস দুপুর থেকে গোধূলি বিকেল গড়িয়ে
সন্ধ্যা আমায় থামাতে পারলো না রাত্রি অবধি।
শুধু আমি একা কেঁদেছিলাম।


অতি সরল সহজে বলতে পারছি আজ,
আমি হেরে গিয়েও জিতে গিয়েছি।
বলতে পারছি তুমি আসলে ঠিক ছিলে।
সেদিন সাত রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে
যখন হাতে থাকা প্লাস্টিকের বোতলটা
মুড়িয়ে ফেলে দিয়েছিলে,
তোমাকে ভুল ভাবতে পারি নি।
অতি নগণ্য ভেবে তুমি ঐ
ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া বোতলের অস্তিত্বের
সাথে তুলনা করেছিলে আমাকে।


সেদিন তুমি আমায় বলেছিলে
দামি নই আমি খুবই সস্তা,
পরিষ্কার ভেবে ভুল হলো,
কেন না আমি তোমার চোখে নোংরা।
আমাকে নাকি ব্যবহারের যোগ্য মনে হয় নি,
সেটাও বলেছিলে,মনে আছে।
আমায় নিয়ে এমন সমালোচনা
আমার একমাত্র তুমিই করেছিলে ।


হুম তুমিই সঠিক ছিলে,
তোমাতে শান্তি খুঁজতে গিয়ে
মানসিক অশান্তি বেড়ে গেলো যে আমার।
তাই তুমি সঠিক ছিলে।


ভাবি, খুব করে ভাবি
যদি সেদিনের বোতল টি কাঁচের হতো
তবে চূর্ণ বিচূর্ণ করতে পারতে,
দেখাতে পারতে সেই হিংস্র রাগ.?
আসলে কি জানো?
ক্ষণস্থায়ী জিনিস গুলো অতিরিক্ত
আঘাত দেয় বেশি।
যেমনটি ভঙ্গুর সুসম্পর্ক গুলো দিয়ে থাকে।


নিয়ম অনিয়মের অনেক অজুহাত
তোমার কাছে ছিলো।
আমি ভঙ্গুর নয় বলে
তুমি এটা জেনেও,
আমাকে বেলা অবেলায় অবহেলা করা সহজ,
আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা সহজ,
আমাকে কাগজের নৌকা বানিয়ে পানিতে
ভেসে দেওয়া তোমার জন্য সহজ।
আমাকে যতরকমভাবে অবজ্ঞা করা যায়
সেটাও তুমি করে দেখিয়েছিলে।


আর যাইহোক
ক্ষত তো আমি হয়েছি,
তাই তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি।
ধনুক কখনো আঘাত করতে পারে না,
কেন না,
তীরের আঘাত সহ্য হবে না বলেই
ধনুক ব্যবহার করো নি কখনো।
আমাকে একঘরে একাকী করে
তুমি বেশ ভালোই আছো,
তাই তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি।


এই পুরনো শরীরে পুরনো হৃদপিন্ডে
ক্ষত যেমন আছে
তার বেশি এখন নতুন ভালোবাসা জন্মেছে।
কিভাবে জানো?
তোমার ঐ ফেলে দেওয়া
ডাস্টবিনে বোতল টি
আজ পুড়ে পুড়ে
তাপে অনুতাপে মিশ্রণে সংমিশ্রণে
বেশ নতুন পাকাপোক্ত হয়েছে।
ঠিক তেমনভাবে আমিও
দৃশ্যমান দৃঢ় সংকল্পে নিজেকে
দৃঢ়ভাবে দাঁড় করিয়েছি
তোমার স্বাভাবিক অভাবে।


আসলে কি জানো,
খুব ভালোবেসেছি তো তাই তোমার
প্রতি ঘৃণা চোখে দেখি না, ঘৃণা টা আসে না।
তবে যতদূর জানি আমি,
প্রেম-ভালোবাসা খুব পবিত্র
গড়তে না জানলেও ভাঙতে জানো বেশ।


যদি ভালোবাসো এমন কাউকে
দেখে নিও সে তোমার মতো কি না,
কেন না পরের বারো ও
ভাঙতে গেলে বরং
ভাঙ্গন টা হবে কভু ভাঙ্গা হবে না।
***********************
২৫শে নভেম্বর ২০২১ইং।