আমি শুধু লিখি প্রতিবাদের কাহিনী,
আমার গল্পে না আছে রাজা না রানী ।
তবু এই গল্প পড়ে সকল ঘরে, সমালোচনার সুরে না হয় প্রশংসায় ভরে ।
আজকে শোনাবো কণকলতার কথা,
তার জীবনের দুঃখ, তার মনের ব্যথা ।
কণকলতার জন্ম গরীব চাষির ঘরে,
কালো রঙ তবুও তাঁর রূপ ঝরে পড়ে ।
শৈশব কাল কাটলো তাঁর বন বাদাড়ে ঘুরে,
কিশোর লতা আজ যে হাইস্কুলে পড়ে ।
সময় দেখা যায় কত দ্রুত বেগে,
যুবতী লতা বিয়ের কথায় কেমন ওঠে রেগে ।
হঠাৎ তাঁর বিয়ে হল বড়লোকের বাড়ি,
কলকাতার বনেদি বংশ - অহংকার ভারী ।
চলল কণক বধূর বেশে কাটিয়ে সকল মায়া,
গরীব বাবার কালো মেয়ে হল দত্তজায়া  ।
বিশাল বাড়ি, প্রচুর লোক,  অনেক দাসদাসী,
তবুও কেবল কান্না পায়, কোথায় লতার হাসি ?
দ্রুতই কাটলো বিয়ের রেশ, শুকালো রজনী মালা,
কণক হল হাসির পাত্র, হাতে যে শুধুই বালা ।
অপমান আর লাঞ্ছনায় বছর গেল ঘুরে,
কণক কবে মা হবে সবাই প্রশ্ন করে ।
মনের দুঃখে কণকলতা একটি কথাই ভাবে,
জীবনে কি কোন দিনও সে সুখের দেখা পাবে ?
এই ভাবেই তিনটি বছর কেমন করে গেল চলে,
পড়শী-স্বজন সকলে মিলে তাকে এখন বাঁজা বলে ।
ওষুধপত্র, হাকিম বৈদ্য চলল নিত্য যন্ত্রণা,
সবাই তাকেই করল দোষী শুনে শাশুড়ির মন্ত্রণা ।
স্বামীও তার মুখ ফেরালো, বদলি হলো দূর দেশে,
এগিয়ে এল মামাতো দেওর হঠাৎ বন্ধুবেশে ।
সহজ সরল কণকলতা মিষ্টি কথায় ভুলল ব্যথা,
ধীরে ধীরে গভীর হলো দুজনের ঘনিষ্ঠতা ।
বৃষ্টি পড়া এক দুপুরে হয়ে গেল বিরাট ভুল,
কয়েক মাস গড়িয়ে যেতেই বাজা লতায় ফুটল ফুল
গর্জে উঠলো ভদ্র সমাজ ভৎসনা আর ধিক্কারে,
বাঁজা কণক কুলটা হয়ে চলল ফিরে বাবার ঘরে ।
যাবার সময় লতার মুখে একটি প্রশ্ন ঝরে পড়ে,
আমি যদি কুলটা হই বাঁজা হলাম কেমন করে ?