বাগান গড়ার সখ ছিলো মোর
তখন ছেলেবেলা,
জাতের বিচার ছিলো নাকো
সেটাই ছিলো খেলা।
কয়েক গাছের নাম জানতাম
বাকিরা অজানা,
তুলে এনে পুঁতে দিতাম
তায় ছিলোনা মানা।
মায়ের আমার ভাঁড়ার ঘরে
মশলা নামে যতো,
সর্ষে ধনে মেথির মতোই
ছিলো সেথায় কতো।
মুঠোয় ভরে ছড়িয়ে দিতাম
বাগান সবুজ সবুজ
কার যে কোথায় স্থান হওয়া চাই
ছিলাম বড়ো অবুঝ।
বাড়ির পিছন দিকে ছিলো
ফাঁকা খামার গোলা-
একপাশে তার লাগানো ছিল
সারি সারি কলা।
তার পাশে এক পুকুর ছিলো
আসতো ঘাটে মাছ,
তারি কোনায় ঠায় দাঁড়িয়ে
একটি শিমুল গাছ।
আমার সখের বাগান ছিলো
সেই পুকুরের পাশে,
হরেক রকম ফুলের মেলা
গুল্মশাখায় ঘাসে।
সময় সাথে বদলালো দিন
বনেদিয়ানা ঘুচে
বাবা কাকা পৃথক হলেন
ঢিল পড়লো কাঁচে।
জমিজমা বসতবাড়ি
চললো চেরাচেরি
অবশেষে সখের বাগান
আসলো যে তার বারি।
ছোটকাকার ভাগের জমি
যেথায় আমার প্রাণ,
এক সকালে পেলাম সেথায়
সোঁদা মাটির ঘ্রাণ।
হালের বলদ ছিঁড়ে খেলো
আধেক মাটির নিচে,
সামলানো যে দায় হলো মা'র
অবোধ কোলে নাচে।
বুকের মাঝে জড়িয়ে রেখে
বারেক আদর করে
নুতন বাগান আবার হবে
আশায় দিলেন ভরে।
সেদিন রাতে ঘুমের ঘোরে
ফুঁপিয়ে শিশু ওঠে
ভালোবাসায় ভালোবেসে
মায়ের হৃদয় ফাটে।
কালের নিয়ম বইলো সময়
অনেক দিনের পরে
সেই সে বাগান পড়লে মনে
কান্না আজো ঝরে।


চোখজুড়ে যার স্বপ্ন ছিলো সেই চোখে আজ খুঁজি,
নরম নরম ভোরের আলো আছে কি তাঁর পুঁজি।
সময় সাথে বদলানো মন দিনের আলো মুছে,
অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ায় রাখলো যারে পিছে।