সৃষ্টি-সুখে হরষিত পৃথিবী,
নব রূপ-রঙে সুসজ্জিতা পৃথিবী,
হে কর্মচঞ্চলা, নিপুণা, শ্যামল কোমলা !
এক দিকে যেমন বিস্তীর্ণ তোমার শষ্যক্ষেত্র,
হিল্লোলিত পত্র রাজি মর্মর-মুখর ;
আর দিকে দাবানলে নাচে ভৈরব
লেলিহান শিখায় ।
সেই নৃত্যে উজাড় হয় বন ;
পশু কুল ছুটে পাগলের প্রায় ;
আর্তনাদ ভেসে যায় বনে বনান্তরে ।
পরক্ষণে, রচিত হয় নব রণ-রঙ্গভূমি-
বদলে যায় পালা ।
ভষ্ম-মলিন প্রান্তরে নামে
গেছো উলঙ্গ আদি-মানব  ;
চলে তার দুর্বিসহ বাঁচার লড়াই ।
এমনি করে তোমার অদৃশ্য কর স্পর্শে
বেরিয়ে এল তোমার শ্রেষ্ঠ সন্তান-
শত জীব, শত জীবন অতিক্রম করি ।
অগ্র-পদ হল তার হাত,
কর্ম উৎযাপনে সেই হাত হয়ে ওঠে শিল্প-সুন্দর ,
অব্যবহারে লেজ, গেলো খসে ।


হে অপার  রহস্য ঘেরা পৃথিবী !
তোমার জীবনের চক্র-পথে,
কখনও কল্যাণ হস্ত বুলিয়ে দিয়েছো
কখনও বা প্রলয় নৃত্যে, ভূকম্পনে,
চমকিয়ে দিয়েছো ভূবন ;
ভয়ে মানব লুটিয়ে পড়েছে তোমার পদ তলে
অসহায় বলির পশুর মতো ।
তোমার সব-রূপ উদ্ঘাটনে হায়, গেছে
কত সংখ্যাতীত বর্ষ-
হত্যে দিয়েছে কত তোমার দুয়ারে !
পরম বিষ্ময়ে অর্ঘ্য রেখেছে
তোমার পদ তলে ;
করেছে মানত,
গেয়েছে শান্তির স্তব;
তুমি বিনা ভ্রুক্ষেপে  দিয়েছো ফেলে !
                                  (চলবে ।)