দাঁড়াও, ভর্ৎসিছো কেন- আগন্তুক আজি
নহে ম্লেচ্ছ ব্রাহ্মণের এ দ্বারে! কাটিয়া
বছর ক’য়, ভাগ্যহত- জেলের জীবন
ফিরিতেছে সন্তানের কাছে ! খুলে দাও-
অঙ্গন-কপাট; এমনই তো সে এসেছিল
কত নীরব দুপুরে; ভুলে গেছো- ওরে!
ও-ই তো সেই মিনির কাবুলিওয়ালা-
আজ তৃষিত এক পিতৃ-হৃদয়! দেখো-
হাতে পেস্তা-বাদাম ! সবই তার তরে;
দেখো আরও- মলিন কাগজেতে মুড়া
মেয়ের ফটো- জোব্বার পকেটে রাখা !
ক'টা প্রহর বাকী- মিনি যাবে শ্বশুর বাড়ী;
বাজিয়া উঠিবে কখন বিদায়ের বীন!
জগৎ মাঝারে আমার-রহমতের মাঝে
রইবে না কোন ভেদাভেদ ! পিতৃ-হৃদয়ে
যে করুণ-বাঁশী বেঁজেছে এত দিন ধরে
সে সুর বাজিবে খানিক পরে মোর বুকে!
তাহার ব্যথিত প্রাণে যদি দিতে পারি
ক্ষণিক শান্তনা- সেই হবে আজি মোর
পরম পাওয়া। যাও- রহমত! ফিরে যাও-
বিবাহ-আয়োজন সংক্ষিপ্ত করি, কিছু অর্থ
দিই তবো হাতে ! দেশে ফিরে যাও!
পিতা-কন্যা'র মিলন-সুখ ভাবি অন্তরে
দেবে বিবাহ-ঘরেতে মঙ্গলালোকে ভরে !
(রচনাকালঃ ২৮-০৫-২০১৭।)
_________
* কবিতাটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের ছোটগল্প ‘কাবুলিওয়ালা’
অবলম্বনে লেখা।