কবে নিয়ে যাবে বলো না গো জীবনানন্দের দেশে
গাংচিল,মাছরাঙা, দোয়েল,কোয়েলের বেশে
খানিকক্ষণ সেথায় বসে বসে
মনের ক্লান্তি ঘুচাব হেসে হেসে।  


দেখব শান্তির নীড় রূপসী বাংলায়
নববধূ কলসী কাঁকে নদী-ঘাটে যায়।
মাঝি মন-সুখে ভাটিয়ালী গান গায়
উথালি পাথালি হাওয়া বন-বীথিকায়


পুকুর, খাল-বিল, নদী-নালা দিয়ে
জেলে ধরে মাছ ছোট ডিঙি বেয়ে
লাঙল হাতে কিষাণ খাটে মাঠে মাঠে
বাংলায় সোনার ফসল ফলায়—তোলে বাটে।


কবে নিয়ে যাবে বলো না গো সেদেশে
যেথা রাতের বেলা চাঁদের হাট বসে।
মেঘেরা খেলা করে আলো-ছায়ায়
বাঁশিওয়ালা বাজায় বাঁশি নির্ভাবনায়।


আমাকে নিয়ে তুমি যাবে কি ওদেশে
যেথা তালের বড়া নারকেলের নাড়ুর গন্ধ ভাসে
গাঁয়ে গাঁয়ে পৌষমাসে মেলা বসে
ছোট খুকী হেঁটে চলে শিশির ভেজা দুর্বাঘাসে।


আকাশ যেথা ধ্বনিত হয় পল্লীর গানে গানে
নদীর কলকল শুনে রচে ফাল্গুনী মনে মনে।
তথা আশার কিরণ জাগে আঁধারের বুক চিরে
ভাঙা-গড়ার খেলা চলে ওই নদীর তীরে।


দীঘির কালো জলে মাছেরা করে খেলা
শরৎ নীলাকাশে ভরে সাদা মেঘের ভেলা।
রাতের বেলা জোনাকিরা আলো জ্বালে চারিপাশে।
আম-কাঁঠাল-জাম-জামরুল ফলে গাছে গাছে।


বলো না গো কি সাজে সাজতে হবে যেতে ওদেশে
ও তো ছিল আমার সোনার বাংলা—হল বাংলাদেশ
কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে করলে তারে বিদেশ
যেতে হলে ওখানে তোমারা চাও ছাড়পত্র
দু-টুকরায় ভাঙলে মোর দেশ—করলে অপবিত্র।
অতীত দোষী নয়—তুমি দোষী।
করলে তুমি দেশভাগ—হয়ে স্বার্থান্বেষী।


ধিক্কার তোমায়!শত ধিক্কার  জানাই
আমি আবার এক বঙ্গ—একদেশ চাই
শান্ত চিত্তে মুক্ত মনে ঘুরব বাংলার পথে
শান্তির দীপ জ্বালাব প্রতি ঘরে ঘরে
বাংলা ভাষায় গাব গান সুমধুর সুরে।