সভ্যতার জন্মলগ্ন হতে,সভ্যরা চেয়েছিল
সমান মানুষকে সমান অধিকার দিতে!
কি সুন্দর তাদের চেতনা!
কি মহৎ তাদের ভাবনা!!


সেই মহান চিন্তাশক্তির বাস্তব রূপায়ণে
গুমরে কাঁদতে থাকে চিন্তাশীলদের মনন
তাইতো কাল বিলম্ব হয়নি —


ঝাঁপায়ে পড়া দুর্বল জাত ভাইয়ের ঘাড়ে,
ওই রক্ততো অনেক মিষ্টি , অনেক সুস্বাদু!
একবার এই স্বাদ জিভে  লাগলে
আমৃত্যু কি তাকে মনের অগোচর করা যায়!
বরঞ্চ এর স্থান হয় রসনার অগ্রভাগে,জিভের ডগায়।


শক্ত দাঁতের মাঝে নির্বলের নরম মাংসপেশী
চাবালেই তো সামর্থ্যবানের ক্ষমতা প্রকাশ পায়।


চিরাচরিত এই নিয়মের প্রতিফলন ঘটে কালে কালে।
কালক্রমে নানা বিবর্তনের সুযোগ্য সান্নিধ্যে
নিজকে আরো নব্য নব্য মোড়কের আবরণে
আবৃত করে উপস্থিত হয়
সভ্য মানব সমাজের দোরগোড়ায়।


কখনওবা সনাতনী কিংবা ধ্রুপদী নামে
কখনওবা আধুনিকতার রঙীন পোশাকে
তীক্ষ্ন নখর আরো তীক্ষ্ণ করে
অতীব সাগ্রহে সজোরে আঘাত হেনেছে
দুর্বলের পিঞ্জরের ঠিক মধ্যিখানে।
দুর্বলরা কি আর কাঁচুমাচু করার সুযোগ পায়!


সেই কাহিল জাতির এক শ্রেণী
নিজকে এক ঠুনকো মোড়ক  দিয়ে সদর্পে
“শ্রমিক” নামে কাস্তে-হাতুড়ি-ছেনি-শাবল নিয়ে
ভেবেছিল সভ্য সমাজের বুকে
একটু “উন্নত শিরে” দাঁড়াবে।


সভ্য মানুষের পিছিয়ে  থাকার কথা ছিলনা,
ছিলও না তারা।
তাদের উর্বর মস্তিষ্ক বারবার
উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় বাহক হয়ে আত্ম প্রকাশ করে।


একদিন তাদের সুদূরদৃষ্টিসম্পন্ন রেডারে ধরা পড়ে
“ক্যারট স্টিক” ফিলোসফি কিছুটা প্রজনন শক্তি হারায়ে ফেলেছে—
ঠিক তখনি “ মটিভেশন” তথ্যের
এক অপূর্ব “হাইব্রিড” ইনজেকশন  পুশ করে দেয় —
ফল পাওয়া যায় তৎক্ষণাৎ ,
প্রডাক্টিভিটির বংশবৃদ্ধি ঘটে উত্তরোত্তর ।


অধিক ইনজেকশনের প্রভাবে
শ্রমিকের শরীরে  “অ্যান্টিবডি”র সৃষ্টি হলে
তার মুক্তি ঘটে নানা ধর্মান্ধ চাদরে —
বিমূঢ় করা হয় নানা রকম সুড়সুড়ি  দিয়ে।
সভ্য “বাবু”রা মত্ত হয় শ্রমিক বিভাজনে।


প্রজনন শক্তির কলটাকে ঠিকথাক অবস্থায় রাখতে
একবিংশ শতাব্দী দেখে এক পারদর্শী কলের মেশিন —
তৎগুনে  উৎপাদনের বংশবৃদ্ধি ঘটে লাফিয়ে  লাফিয়ে।
শ্রমিকের কর্মধারার শ্রীবৃদ্ধি ঘটে!
চোখ বন্ধ হয় বোকা বাক্সের মনিটরের পর্দায়।
ঠুঁটা  হাতের অঙ্গুলি শেকলবন্দী হয়
কম্পিউটারের কীবোর্ডের গাত্রে।


প্রজননের কর্মধারা সক্রিয় রাখতে
ঝিমানো অঙ্গুলি বিভোর থাকে টেপাটেপির মধ্যে।
আর ব্যর্থ হয়ে মন্দির,মসজিদে গিয়ে ধর্না দেয়।
শিরদাঁড়া যে কখনও ঋজু হয়না!!