পডন্ত বিকালবেলায়
নীল নদী চন্দ্রপ্রভার উপকূল তটে
হেটে চলছি আমি একা, অরণ্যানীভিমুখে--
খুব একটা বেশি নেই সময়  
প্রভাষিত সোনা ঝরছে পশ্চিম দিগন্ত রেখায়
রক্তিম দিনমণি ভাস্বরিত  স্বমহিমায়
শান্ত নীল নদী নিয়ে নেবে নিজ বক্ষে,
তাকে ক্ষনিকায়---


কূজনরত ধবল ধবধবে সাদা বলাকারা
উড়ে যাচ্ছে নীলাকাশের বুকচিরে,নিজ নীড়ে---
উন্মুক্ত ডানা মেলা;
কেউ করে না তাদের মানা!
গাঙচিলের রংগলীলার সমাপ্তি ঘটেনি এখনো,  
খেলে চলছে সংগিনীর সাথে--
মৃন্ময়ী বসুন্ধরার অঞ্চল তটে।


মনোরম এ অপার সুশোভিত  মাধুর্যমণ্ডিত
দৃশ্যপট অবলোকন করতে করতে
সে লাবণ্যময়ী মুখ ভেসে ওঠে স্মৃতিচন্দ্রপটে;
মনে পড়ে যায়,  আমার মনে পড়ে যায়—
তোমায়-- আবছায়ায়!
হে মোর প্রেয়সী,সুরঞ্জনা।


পাগলিনী বাদল গেছে থেমে ,
পুঞ্জিভূত সাদা মেঘ শরতের শেষের দিকে
পালতোলা নৌকার মত ছুটে মরুৎ বেগে
এক অজানার দেশে,
বিদেশিনীর বেশে---

পূর্ণশশী বিতরিছে উদার হস্তে
স্নিগ্ধ জড়ানো চন্দ্রিমা ধরনীর গাত্রে
ঝিকমিক করে জ্যোৎস্না আলোর কণায়
হিন্দোলিত শুভ্র কাশফুল কবোষ্ণ হাওয়ায়
দুলে যায় আর দোলা দেয় হিয়ায়—


এরূপ সুবিমল রজনীতে
অনন্ত নিখিলের 'পরে
চলতে চলতে পথে পথে
দেখি তোমার কাজল কালো হরিণী আঁখিপাতে
উঠছে ফুটে অপরাজিতা পুষ্পের
পাপড়ি নিসৃত মনমোহিনী আঁখিরেখা---
আজও  মন্ত্রমুগ্ধের মত শিহরিত আমার শিরা
তোমার ঝিনুকের মত পাতলা ঠোঁটের
গোলাপি লিপিস্টিক আভায় আমি পাগলপারা


ইচ্ছে করে, উন্মাদের মত ছুটি ত্রাসে;
তোমার নিটোল শরীরের কোমল পরশে
জাগায়ে তুলি যৌবনের মত্ততা—
তোমার বাহুবন্ধের ভাঁজে নিজকে করি সমর্পিতা।


কিন্তু অসহায়!
সরল কোণে দুজনের পথ চলে যায়
দুমেরুর দিশায়--
অস্তমিত সূর্যের মত হারায়ে ফেলি তোমায়
গিরখাদের অতল কৃষ্ণ বিবরতায়—
শত প্রয়াসেও আমার উৎকর্ণ কর্ন শুনতে না পায়
তোমার ফিসফিস করা কামনা মদিত শব্দবন্দনী—
নিজকে আজ তাই গোপন করি
তিমির ঘন গহীন অরণ্যে--
চন্দ্রালোক আসবে না তার কোন কোণে।