বন পলাশীর পল্লবঘন ছায়াঘেরা পথে
হয়েছিল দেখা একাকী তোমারি সাথে
ছিলে তুমি চপলা চঞ্চলা ষোড়শী যৌবনা
অপলকে দেখেছিলে মোরে হরিণী নয়না
কী না মোহ ছিলো তোমার আঁখিপাতে
জুঁইফুলের মালা গেঁথেছিলে নিজ কবরীতে
একমুখ হাসি ছিল তোমার গোলাপি ঠোঁটে
ডেকেছিলে কাজল কালো চোখের ইশারাতে
মেহেন্দি রাঙা প্রজাপতি অঙ্কিত ছিল দু'হাতে
কাঁকন তোমার বেঁধেছিলে স্বর্ণ লতিকাতে
ললাটে দীপ্ত ছিল তোমার লাল কুমকুম রেখা
রূপালি মনে জ্বেলেছিল প্রেমের বহ্নি শিখা
সেই শুভদিনে জড়ালে আমারে বাহুডোরে
দিয়েছিলুম মোর প্রাণ সকলই উজাড় করে
তোমারি ভালবাসার তরে, নিজেরে শূন্য করে
উল্লাসে মনবিহঙ্গ উড়ায়েছিলুম আকাশ 'পরে
জানি, পারো নি আমায় আজও ভুলিতে, মিতা
মৃদুভাষিণী প্রাণপ্রিয়া মোর,ওহে লবঙ্গলতিকা!
সেই অভিসার সতত মনে পড়ে গো তোমার,
প্রেম রসে ভরা আমার ললিত চন্দন উপহার!
কথা তুমি দিয়েছিলে আমার হাতদু'টি ধরে
শপথ করেছিলে চুমি আমার দু'নয়ন 'পরে
তোমার ভালবাসা অক্ষয় রবে আজীবন ধরে!
ফোটাবে সদা কুসুমরাজি আমাদের সুখনীড়ে!
আশার স্বপন-বীজ, রুয়েছিলুম প্রণয় বাগিচায়
হঠাৎ কেমনে,শুকালো নব উন্মোচিত কিশলয়
গোঁড়া কেটে দেয়,আত্মাভিমানী বিষপোকায়
হায়রে হায়!মানবতা ধূলি মাঝে গড়াগড়ি খায়!
তোমার বাবা দিয়ে দিল বিয়ে, তোমারি অমতে
নামকরা বিলেত ফেরতা আপন স্বজাতে
জানি আমি, পারো নি কভু তুমি সুখী হতে...
জাত বড়! ভালবাসার মূল্য কী মেলে মহীতে!
© অনুপম