আজ এই নিঃশব্দ গভীর রজনীতে
ঘুম ভেঙে গেলো,
চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার,
নিঃশ্বাস ফেলি তা শুনা যায়।
বুকের ভিতরের,
ঘড়ির কাটার ন‍্যায় টিকটিক শব্দ,
তাও শুনা যায়।
হঠাৎ মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো
মনে পড়ে গেলো তাঁর কথা,
আজ এই নিঃশব্দ গভীর রজনীতে।
তাঁরই সাথে প্রতিদিন হতো দেখা,
নিয়মিত বলা হতো কথা,
ঐ যে,ঐ নদীর তীরে।
কতো যে বলা হতো কথা
ঐ যে,ঐ শিমুল গাছের তলায় বসে।
প্রতিনিয়ত সুখ-দুঃখের কথা হতো
বলা হতো,দু'জনের ভালোবাসার কথা।
মনে পড়ে গেলো তাঁকে
এই নিঃশব্দ গভীর রজনীতে।


কোন একদিন আমার হাতে হাত রেখে
কথা দিয়েছিলে আমায়,
চিরকাল থাকবে আমার সাথে,
সুখ-দুঃখের সাথি হয়ে,জীবনে ও মরণে।
কি সুন্দর হাসি ছিলো তাঁর মুখে!
এক গালে তাঁর টোল পড়িত তাতে,
সাথে যেন দন্তের মুক্তা ঝরিয়া পড়িত তবে।
এই তো সেই দিনকার কথা
এক শীতের পড়ন্ত বিকেলে,
বলছিলো কথা ঐ গাছটির তলে,
আমারও পাশে বসে।
হঠাৎ তাঁর বাবা এলো নদীরও ঘাটে
দেখতে পেল তাঁকে আমারও সাথে,
হাতটি তাঁর ধরা ছিলো আমার হাতে,
ভয় পেয়ে,হাটা দিলো চিরচেনা সেই পথে।
যতক্ষণ যাচ্ছিল দেখা তাঁকে
তাঁকিয়ে ছিলাম আমি তাঁর পানে।
যতক্ষণ দৃষ্টির লক্ষ্যে ছিলো সে
কিংবা তার পড়েও আরো কিছুক্ষণ,
তাঁকিয়ে ছিলাম তাঁর দিকে বিমোহিত হয়ে।
একবারও দেখলো না ফিরে,
বেলী ফুলের মালা ছিলো তাঁর খোঁপাতে।
এই নিঃশব্দ গভীর রজনীতে
মনে পড়ে গেলো তাঁকে।


পড়ের দিন এক মুঠো রজনীগন্ধা হতে নিয়ে
বসে ছিলাম,
সে আসবে বলে তাঁর অপেক্ষাতে।
কিন্তু সে তো আসল না ফিরে
আর কখনো দেখা হলো না তাঁকে,
কথা হলো না বলা তাঁরই সাথে।
দেখতে দেখতে কেটে গেলো
প্রায় এক যুগের কাল,
দেখা যে হলো না তাঁর সেই মুক্তা ঝরা হাসিকে।
মনে পড়ে গেলো তাঁকে
এই নিঃশব্দ গভীর রজনীতে।