একটি তিক্ত অভিজ্ঞতায় আজ মন ভারাক্রান্ত হয়ে রইল সারাদিন .
অনেকদিন থেকেই স্কুটি চালায় অপু,কিন্তু লাইসেন্স না থাকায় মাঝে মধ্যেই অসুবিধায় পড়তে হত তাকে.. হঠাৎ তার এক বন্ধুর ইচ্ছায় গাড়ির লাইসেন্স করতে হল তাকে !
লাইসেন্স করার নিয়ম অনুসারে এগনোর সময় তার প্রথম ধাপ বন্ধুটি তার সাথেই ছিল,,কাজেই অপুকে অসুবিধায় পড়তে হয়নি সেদিন .
কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে ত্রিশ-পয়ঁত্রিশ জন পুরুষের মাঝে অপু নিজেকে খুব একা অনুভব করতে থাকল ,,কারণ প্রত্যেকেই তাদের থেকে ভিন্ন এক প্রানীকে চোখ দিয়ে কেউবা প্রশ্ন করছিল একা নাকি ? কেউবা চোখমুখ কুঞ্চিত করে ভাবছে এর আবার কি প্রয়োজন পরলো লাইসেন্সের মত অপ্রজনীয় পদার্থের .? কেইবা ভাবছেন .....?? থাকনা তারা তাদের ভাবনা নিয়ে.... অপু বহুমুখের বহুপ্রশ্ন এড়িয়ে নিজ কাজ সমাধা করে ফিরে চলল আপন মনে কৃষ্ণনগরের কালেক্টর অফিস ছেড়ে ,, রবীন্দ্রসদন পার করে,, একলা চার্চকে দুরে ঠেলে ধীরে ধীরে স্টেশনের দিকে হঠাৎ বুঝি বা পেছন থেকে কেউ ডেকে উঠল ! ঘাড় ঘুড়িয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে ত্রিনাথ লজ্ .. কিন্তু নাহ্ কেউ তো নেই.... নিজের মনে হেসে বাড়ি ফিরে আসে অপু...
কিন্তু আজ প্রশিক্ষণের দিন অপু একটু ঘাবড়ে যায় . একে তো একা স্কুটি নিয়ে এতটা রাস্তা একা চলা .তারপর অকুস্হলে গিয়ে দেখে এত মেলা বসেছে গাড়ির হন্ডা,,বাজাজ, ইয়ামাহ,, বুলেট,,অ্যাপাচি আর দু-একটা তার মত ছোটো স্কুটি..
তবে তাদের মালিক ও বেশির ভাগ পুরুষ . কয়েকজন মহিলা যে নেই তা নয় তবে তারা কারো না কারো বগলদাবা হয়ে এসেছেন .. যেন সুখী দুটি কপোত-কপোতি বিকেলের হালকা হাওয়া গায়ে মেখে দুলে দুলে চলেছে.. এইসব দেখতে দেখতে গাড়িগুলো শুয়োপোকার লয়ে এগোতে থাকে লাইন . কিন্তু এরই মাঝে শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগীতা সামনে গন্তব্যস্হলে পৌছাবার .. গাড়িতে গাড়িতে ঠোকাঠুকি,, পায়ের ওপর চাকা.. পেছনে গাড়ির ধাক্কা ,,,এইভাবেই কোনোরকম এগোতে থাকে অপু .
কিন্তু প্রতিযোগীতায় যখন একা একটি মেয়ে কয়েকজনকে পেছনে ফেলে এগিয়ে আসে ,,তখন পেছনে পরে থাকাদের গাত্রদাহ হবার ই কথা .তবু না জানি কেন সামনে-পেছনে সবাই একত্রে রে রে করে প্রতিযোগীতায় এগিয়ে যাওয়া অপুকে সহবৎ,,অভিশাপ,প্রয়োজনীয়তা, নিয়ম,,শিখিয়ে চলে সমস্বরে..... আর অপু একা এবং একা এগিয়ে চলে গন্তব্যে...


( নতুন প্রচেষ্টা)