না শেষ করা গেল না .. ! যা আপাত শেষ বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল তাই আষ্ঠে পিষ্ঠে বেঁধে জড়িয়ে আরও পাঁকে পাঁকে বাঁধল.. ! কবিতা পারে নি তার স্বামীকে দুরে রাখতে,,তার স্বামী ফোনে সারাদিন ব্যস্ত থাকায় সন্দেহ মনে দানা বাঁধতে থাকে,,মেয়েদের মন ভালোবাসার গন্ধ পায়,,সেই গন্ধটা অনেকদিন হল কবিতা পায় না,,, রাতে তার শক্ত বুকে মাথা রেখে তন্নতন্ন করে খুঁজেও ভালোবাসার সৌরভ পায় না সে ..! জৈবিক নিয়মে জীবনের কাজগুলো ঠিকই চলছে... ! তবুও সেই বিয়ের পর পর যে স্বামী ঘরে এলেই একটা সুর বেয়ে তালে তালে ,ছন্দময় রাত,,দৃঢ় চুম্বন,গভীর আলিঙ্গন,,আদো আদো সকাল,,, এটো চায়ের স্বাদ সব যেন কেমন বিস্বাদ হতে থাকল!
হঠাৎ ই একদিন ভুল করে ফেলে যায় ফোন টা সৌরভ !
কবিতা এই সুযোগটা ছাড়ে না,,পাগলের মত খুঁজতে থাকে ফোনে কে সেই গন্ধচোর যে তার জীবনের রং চুরি করে চলেছে.... আর পেয়েও যায় ,আর যা পায় তাতে তার ভালোবাসার ভিত নড়ে যায়,,কিংকর্তব্যবিমুর হয়ে বসে থাকে,,, কবিতা ভাবতে পারেনি তার সেই চেনা গন্ধ কবেই অন্য কারো হয়ে গেছে..তার মাথার লাল সিদঁর অন্য কারো সিঁথিতে জ্বলজ্বল করছে,,!
কবিতা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল সৌরভ যেখানে সুখী সেখানেই থাকুক,,,সে নিজে সরে যাবে তাদের জীবন থেকে... সৌরভ বাড়ি ফেরার পর তাকে একটা কথাই জিজ্ঞাস্য ছিল --"তুমি আমাতে সুখী নও?" সৌরভ থেমে থেমে আমতা আমতা করে উত্তর দিয়েছিল "কেন একথা কেন?" কবিতা ফোনটা হাতে দিয়ে বলল ডিভোর্স ই এর একমাত্র সমাধান..! কিন্তু সৌরভ সেদিন ভেঙে পড়ল...! অঝোর ধারায় চোখের জল পড়তে থাকল তার দুটি নয়ন বেয়ে,, হতাশার সুরে বলতে লাগল "কবিতা এসব তোমার জন্য,, তুমি আর আগের মত আমার খেয়াল রাখো না,, তাইতো যেখানে ভালোবাসার আহ্বান পাই ,,ছুটে ছুটে যাই,,,আসলে তো আমি ভালোবাসার কাঙাল..!
কবিতা সেইদিন হতে চোখে হারায় সৌরভকে..! বলার আগেই উত্তর দেয়,, চাওয়ার আগেই কাঙ্খিত বস্তু তার হাতে তুলে দেয়,, ভালোবাসার গন্ধে সৌরভকে সুরভিত করে রাখে,,আর এইভাবেই চলতে কবিত-সৌরভের দাম্পত্য জীবন ,!
তবু সৌরভ মাঝেমধ্যেই হারিয়ে যায়.. মাঝে মাঝে উদাস হয়ে যায়,, আবার কখনো বা উদার, দিলখোলা,হাসি-খুশী হয়ে যায়....কবিতা এখন আর আগের মত সৌরভকে বুঝে উঠতে পারে না,,তবুও সৌরভের সিঁদুর মাথায় নিয়ে স্বামীর মঙ্গল কামনা করতে থাকে প্রতিদিনের জলমিষ্টি তুষ্ট দেবতার পায়ে !