জীবনের চলার পথে কত তুচ্ছাতিতুচ্ছ দুঃখ-যন্ত্রণা,
আনন্দ-সুখ, ব্যর্থতা ও সফলতার অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হতে থাকে,
এগুলোর কিছু কিছু আমরা ভুলে যাই,
কিছু ভুলে যেতে চাই অথবা ভান করি ভুলে যাওয়ার ...


আবার কিছু বা কারো স্মৃতি বুকের গভীরে কাঁটার মত বিঁধে থাকে,
এপাশ থেকে ওপাশ হলেই খচ্‌ খচ্‌ করে অদৃশ্য রক্তক্ষরণ ঘটায়...


রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজন ব্যতীত মানুষের জীবনে
যে সম্পর্ক অত্যন্ত গাঢ় প্রভাব ফেলে সে হলো বন্ধু।
এ সম্পর্ক এমনই রহস্যময় যে মানুষের কাছে!


সেটা জীবনে প্রথমবার পড়া বইয়ের পাতা ওল্টানোর মত মনে হতে পারে,
যেন প্রতি পাতায় পাতায় রোমাঞ্চ, এক এক অধ্যায়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা,
অজানাকে জানতে পারার আনন্দ, কিংবা জানাতে পারার মুক্তি...


তার উপর অভিমান করা চলে, হ্যা চলতেই পারে,
কিন্তু রাগ ক’রে সঙ্গছাড়া হওয়া চলে না।
এমনই এক সরল ও সহজ সম্পর্ক এই বন্ধুত্ব,
কোনো দায় থাকে না তা আজীবন রক্ষা করার...


সম্পর্কছেদেও প্রয়োজন হয় না কোনো আইনী দলিলের,
স্বাক্ষীও অদরকারী কোনো চুক্তিতে যেতে;
যেটা বলবৎ থাকে তা হলো দুটি হৃদয়ের বিশ্বস্ত নির্ভরশীলতা,
আন্তরিক প্রীতিমুগ্ধতা ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।


একজন সৎ বন্ধুই হতে পারে হতাশ জীবনে আলোকোজ্জ্বল আশা,
অপার বেদনাময় জীবনে একটু সান্তনার শীতল পরশ,
কিংকর্তব্যবিমূঢ় সময়ে উত্তম পরামর্শদাতা ও সহায়তাপূর্ণ সাথী।


কোনোরকম ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার দেয়াল এখানে নেই ...
তা বলেই যে বন্ধুত্ব দায়িত্বরহিত শুধুই এক সাময়িক সুসম্পর্কের নাম, সেটাও নয়।
সুন্দর ও সাবলীল প্রশান্ত, নিয়মিত এদিক ওদিক,
বাঁক নেয়া নদীর মত এই সন্মন্ধ বয়ে চলে যায়, দূর থেকে সুদূরে...


সংস্কৃত শ্লোকে প্রাণের বন্ধুকে নির্ধারণ করা হয়েছে ‘অত্যাগসহন বন্ধু’ হিসেবে,
সে-ই প্রকৃত প্রস্তাবে বন্ধু, যার বিচ্ছেদ অসহনীয় হয়ে ওঠে অনুক্ষণ॥
অজানিতেই হৃদ-কমলে এক সুরের দোলা লাগে, তির্‌ তির্‌ কাঁপে অন্তরাত্মা ---


"তোমাকেই চেয়েছি সবখানে, সবার মাঝে আপন মনে
তোমার বিরহে মন সদা সর্বদা মিলনের দিন গোনে...!


রবির আলোয় উদ্ভাসিত - বন্ধু'র মিলনাকাঁঙ্খা প্রানে বড্ড বাঁজে ~


'শুধু তোমার বাণী নয় গো হে বন্ধু, হে প্রিয়
মাঝে মাঝে প্রাণে, তোমার পরশখানি দিও'