জীবনের যাবতীয় লেনদেন, লাভক্ষতি, সুখদুঃখ সব কিভাবে শুধুমাত্র একজন প্রিয় মানুষকে ঘিরে হতে পারে তার কোন সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই, যেমন নেই মহাজাগতিক সীমানা প্রাচীরের অবস্থিতির কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা... আমরা যত জানি আসলেই তার চেয়ে আরো অনেক বেশি জানিনে... এই 'আফসোসের কাসিদা'টি মাঝে মাঝেই বের করে পড়ি, ভালো লাগে, শান্তি পাই, অনুতপ্ত হই... রহস্যময় এই মানব জীবন...!


ছন্দ ও প্রকৃতিঃ বিরহ মিত্রাক্ষর
অন্তানুপ্রাসঃ কাজী নজরুল ইসলাম ও জসিমউদ্দিন


আজ যত পড়ি ওর রেখে যাওয়া বিদায় দিনের লিখা,
ততই অশ্রু দুটো চোখে জ্বলে হয়ে বেদনার শিখা;
কত কাছটাতে ছিল সে আমার হয়ে নয়নের তারা,
তার প্রেমডোরে বাধা পড়েছিল পরাণ পাগল-পারা।।


চোখে ছিল তার অপার আবেগ পড়তো তা কেঁদে ঝরে,
আমার চোখের প্রেম চাহনিতে হাসতো সে লাজে মরে;
যদিবা কখনো বুঝতো সে, আমি কষ্ট পেয়েছি কোনো,
সাদা লতা হাতে কাঁটতো আঁচড়, রাঁঙা বঁধু হতো প্রিয়;
হাতে তার সেই রক্ত আঁচড়ে আদর ভরিয়ে দিয়ে,
ব্যথা তার সব করতাম জল কত ভালোবাসা নিয়ে;


কভূ আমাদের অমন মধুর ভালোবাসাবাসি ক্ষণে,
বলতো, প্রিয় কি রাখবে আমায় চিরটিকাল মনে!
হয়তো তুমি আমার প্রেমের নীল কন্ঠ হয়ে,
ভোরের শীতল শিশির বিন্দু বুকে নিয়ে যাবে বয়ে;
তোমার সত্য প্রেমে যদিও বা প্রেমময় আমি সত্যি,
তবুও আমি মানুষ বটে সময়ই আমার গতি;


প্রেমের আগুনে জীবন প্রভাতে ‘ফাগুনে বাতাস’ বয়
বাতাস পড়লে আগুনও প্রেমের ঠিক নিভূ নিভূ হয়;
কেমনে কি করি, বিশ্বাস আজও বুকে বাসা বেধে আছে
হারিয়ে যাওয়া পথ দিয়ে তুমি আসবে আমার কাছে;
পুরানো দিনের কথা সবই আজ দ্বিগুন নুতন হয়ে,
দোলায় প্রানের না বলা কথারে অফুট্‌ সুখ প্রণয়ে;


নিয়তির সব ধনু ভাঁঙা তীর একে একে দিল ভাঁঙে,
তবু সেই ভালো সে ব্যথা পেলো না, যে ছিল মন গাঁঙে;
ভাবছে হয়তো প্রিয়া আজি আমি নুতন আলোয় রাঁঙি,
ভুলেছি প্রিয়ারে ফেলেছি আঁধারে, ঘৃনিত ফিরিঙ্গি;


যেতে পথে প্রিয় যা কিছু পুরনো ফেলে গেছো অবহেলে,
কুড়ায়ে কুড়ায়ে নিয়েছি তা তুলে লাগবে যে বেলা গেলে;
তোমার অবহেলার ‘এই আমি’ নুতন আছি আজো,
দূরে আছো তবু আমার প্রানে শেষ সুর হয়ে বাঁজো;


যে পথ দিয়ে চিরতরে চলে গিয়েছো আমায় ফেলে,
সে পথেই এই প্রানখানি গেলো...কভূ যদি দেখা মেলে!


২৬ নভেম্‌বার ১৯৯৬ মঙ্গলবার
পুরাতন কস্‌বা,
শ. ম. র. সড়ক
যশোর


পোস্ট স্ক্রিপ্টঃ
এই বিরহ গীতিকা'টির উপর কালের ধুলো পড়তে পড়তে চৈত্রের মাঠের মত চৌচির হয়ে পড়েছিল, আজ আমার জীবনের এক মহাক্রান্তি লগ্নে পুরনো দিনের বিশেষ করে ক্লাস টুয়েল্‌ভের কোনো ঘনিষ্ট বন্ধু'কে যেমন ভাবে মনে পড়তে পারে, তেমন করেই পুরনো কবিতার নোটবুকে এই অসম্ভব পুরনো অথচ চির নুতন এই লেখাখানি পেয়ে খুব প্রশান্ত হলো এই পোঁড়া মন! লেখা আজও থামেনি, থামে না, থামতেও নেই কিন্তু ইংরেজি ভাষায় কাব্য-সৃষ্টিতে সমকালীন ব্যপৃত থাকায় বাংলায় প্রানের জোয়ারের উত্তোরোত্তর টান বৃদ্ধিতে সুখ পাচ্ছি খুব, বেশ সুখ পাচ্ছি। যদিবা আগ্রহ হয় কারো তবে দেখে আসতে পারো আমার 'ইংরেজী কাব্যের উঠোন', একটু সল্পায়তন হলেও দিব্যি হাত পা ছড়িয়ে ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে আবৃত্তি উপযোগী কিছু কাব্য উপহার রয়েছে এখানে আন্তর্জাতিক বন্ধুদের জন্যে।