যিনি আমাদের মাথা উন্নত করে দাড়াতে শেখালেন
যিনি আমাদের মুক্ত ভূমি মুক্ত আকাশ এনে দিলেন
যিনি আমাদের ডানা মেলে উড়তে শেখালেন
যিনি আমাদের স্বাধীনতার অমৃত সুধা পান করালেন
যিনি আমাদের মানচিত্রখ‌চিত পতাকা এ‌নে দিলেন
‌যিনি বাঙালী মুক্তির জন্য একটা জীবনের যৌবন জে‌লের ঘা‌নি টানলেন;
যিনি নিপীড়িত, বঞ্চিত-শোষিত মানুষের জন্য সারাটা জীবন বিলিয়ে দিলেন
যা‌কে পা‌কিস্তা‌নিরাও মারার দুঃসাহস  করেনি-
তাঁকে কিনা আমরা মেরে ফেলেছি!
কী চরম অকৃতজ্ঞ জাতি আমরা!
ছি! এই লজ্জা কোথায় রাখি!
রা‌গে-দুঃখে, ঘৃনায়-ক্ষ‌ে‌াভে ও অপমা‌নে
মা‌টির নি‌চে লু‌কি‌য়ে যে‌তে ই‌চ্ছে ক‌রে।
হায়‌রে অভাগা জা‌তি! এতটুকু বোধ শ‌ক্তি নেই-
নিজের পা‌য়ে নি‌জেই কোড়াল মার‌লি?
‌নি‌জের পা ফে‌লে দি‌য়ে অ‌ন্যের পা‌য়ে পথ চল‌লি।


কী ভে‌বেছিল হন্তারকের দল?
তাঁর নাম মু‌ছে ফেল‌বে মান‌চিত্র থে‌কে?
যার রক্ত মি‌শে গে‌ছে ধানম‌ন্ডির ব‌ত্রিশ নম্বর বা‌ড়ির সিঁ‌ড়ি থে‌কে
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল জু‌ড়ে,
-‌যার রক্ত মি‌শে গে‌ছে ব‌ঙ্গোপসাগ‌রের উত্তাল জলের তরঙ্গে,
-‌যার রক্ত মি‌শে গে‌ছে বাংলার সোনালী শস্য ফলা ফস‌লি জ‌মি‌তে,
যার রক্ত মি‌শে গে‌ছে আবহমান সময় ধ‌রে
বয়ে চলা বাংলার নদী‌তে,
-যার রক্ত মি‌শে গে‌ছে বাংলার কৃষক-শ্র‌মিক-মজু‌রের পেশীবহুল গ্রন্থিতে,
-যার রক্ত মি‌শে গে‌ছে বর্তমান-ভ‌বিষৎ প্রজ‌ন্মের সব বাঙ্গালীর হৃদ‌পি‌ন্ডে।


যতদিন এই মানচিত্র থাকবে
যতদিন ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের এক ইঞ্চিও ভূমি থাকবে
যতদিন তীরে এসে বঙ্গোপসাগরের তরঙ্গ আছড়ে পড়বে
যতদিন এই অবারিত মাঠে সবুজ সোনালী ফসল ফলবে
যতদিন নদী খরস্রোতা রবে
যতদিন কৃষক-শ্র‌মিক-মজু‌রের পেশীবহুল গ্রন্থিতে শক্তি রবে
যতদিন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একজন বাঙালিরও অস্তিত্ব থাকবে
ততোদিন তব নাম লেখা রবে হীরক খঁচিত বর্ণে সোনায় মোড়ানো ফ্রেমে।


ব‌ত্রিশ নম্বরের ‌বাড়ি‌তে এখনও সূর্য উ‌ঠে
মুজিব আ‌লোয় আ‌লো‌কিত হয় বঙ্গীয় বদ্বীপ,
অনন্তকাল সেই আ‌লোয় আলোকিত থাক প্রিয় বাংলা‌দেশ।


তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫।
(মুক্তক অক্ষরবৃত্ত)