পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে মানুষ আজো অভিনয় করে
এখনো কাঠবিড়ালী কাঠবাদামের খোসা ছড়ায়
জোঁনাকীরা আজো রাতভর আলো জ্বালে
পাখিরা আগের মতো আকাশে উড়ে
ফুটপাথে মানুষ হাটে- ফকিরেরা হাত পাতে।


এখন ফাগুন আসে
কোকিলেরা গায় মধুর কন্ঠে
প্রজাপতির রং দেখে মুগ্ধ হই আমরা
পুঁই মাচাতে দোয়েল আজো শিস দেয়
এখনো মেঘ করে, রংধনু উঠে আকাশে।


শিল্পীর তুলি আঁকে ক্যানভাসে
কবির কলম খাতা ভরে রাতভর
নিশাচর আজো রাত জাগে নিথর
পেঁচার মলিন মুখ পুলকিত হয়নি আজো
বকের সাদা পালক এখনো সাদা।


আজো ঘাসের উপর শিশির জমে
ধান শালিকেরা খুটে খুটে খায়
কিষানীর হাতে আছে কুলো ভরা ধান
শরতের আকাশে সাদা মেঘ ভাসে
এখনো নদীরা ছুটে চলে আপন ধারায়-
শুধু তুমি আছো বলে।


পৃথিবী ও প্রকৃতি বদলায়নি এতটুকু
বদলেছে তুমি, তোমার রূপ-ভিতরের মানসটাও।


পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে মানুষ আজো অভিনয় করে
তবে একটু অন্যরকম।
মাঝে মাঝে মনে হয় –
কাঠবিড়ালী কাঠবাদামের খোসা আর ছড়ায় না
জোনাকীর আলো আর জ্বলে না
পাখির ডানা ভেঙ্গে গেছে
রাজপথে মানুষ থমকে দাড়িয়েছে
ফকিরের ভান্ডার পূর্ণ
কোকিলের কন্ঠ বসে গেছে
প্রজাপতিরা আর রঙ মাখে না
পুঁই মাচায় বসে দোয়েল আজ শিশ দিতে জানে না
অথবা দোয়েলের কন্ঠ রোধ করা হয়েছে
রংধনুর সাত রঙ ধূসরতায় মিলেছে
শিল্পীর তুলি থেমে গেছে
কবির খাতা শূন্য।


নিশাচরেরা এখন রাতে নিশ্চুপ ঘুমায়
পেচার মলিন মুখ পুলকিত হয়েছে
বকের সাদা পালক এখন কালচে
এখন ঘাসের উপর আগুন ঝড়ে
ধাঁনশালিকদের আর দেখা যায় না
কিষানীর মলিন মুখ হাতে কুলো ভরা ধাঁন নেই
শরতের আকাশে বিদ্যুৎ চমকায়- কালো কালো মেঘ
থেমে গেছে নদীর প্রবাহ ধারা-
শুধু তুমি নেই বলে।