তোমাকে আজকাল ছদ্মনামে ডাকতেও ভয় পায়;
পিছে, কেউ জেনে যায় যদি-
আর কেউ নতুন করে জানুক তা আমি চাই না;
তাছাড়া, জানিয়ে লাভ কি বলো।
তুমি তো সেই কবে চলে গেছো-
সযতনে গড়া রত্ন প্রাসাদ বিধ্বস্ত করে;
এরপর, আমার সেই শান বাঁধানো ঘাটে
আর কেউ ডুব দেয়নি।


পাড়া গাঁয়ের মেঠো পথে তোমাকে নিয়ে হাঁটবো বলে-
সেখানটায় আজ জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
যে নীল দিগন্তে তোমাকে নিয়ে হারাবার কথা ছিল-
সে দিগন্ত আজ কালো মেঘে ডেকে গেছে।
আমাদের দেখা পদ্ম পুকুরে ভেসে বেড়ানো রাজহংস যুগল
এখন কয়েক প্রজন্মের জনক
রোজ বিকেলে আমাদের তেপান্তরে যাওয়ার
পঙ্খীরাজ ঘোড়া এখন আর নেই
সোনালী ধানেরা তোমার প্রতীক্ষায় থেকে
কত বার ঝড়ে গেছে
ডাহুক পাখি নিশিভর ডেকে ডেকে ঠোঁট রক্তাক্ত করেছে
কা কা করে কাক মরন কান্না কেঁদেছে।


তোমাকে সব উজাড় করে দিবে বলে নিত্যদিন শত-
সহস্র গোলাপ ফুটে ঝড়ে যায়।
হাসনা হেনা, রজনীগন্ধা হৃদয় নিংড়ানো নির্যাস দিয়ে
কত মোহনীয় সৌরভ ছড়ায়।
মেঘের গর্জন শুনে ময়ুর অপার সৌন্দর্যের
রাজকীয় পেখম মেলে
ঝিঁঝিঁ পোঁকারা সব অপার্থিব সুর মূর্ছণা তুলে,
জোঁনাকীরা আলো জ্বালে
নক্ষত্র আর নিশাচরেরা রাত্রি জেগে থাকে
সাগরের অথৈ তলে ঝিনুক সঙ্গোপনে
মুক্তো আগলে রাখে।


তবুও তুমি এলেনা;
জানি, তুমি আসবে না।
তবুও হিজল বনে ফুল ফোটে
কৃষ্ণচূঁড়া লাল হয়, শিমুলে আগুন লাগে
শীষ দিয়ে দোয়েল গান গায়
বর্ষাজলের স্পর্শে শিহরিত হয় কদম-কেয়া।