মাগো বলতে পারো
কবে হবে আমার বাড়ি ফেরা।
মাগো কবে হবে তোমার
প্রতীক্ষার দিন গোনা শেষ।
মাগো এই ব্যস্ত শহরে
আমার বড্ড ভয় হয়
যদি আর বাড়ি ফেরা না হয়।
মাগো চোখের জল শুকিয়ে গেছে
আমার যে আর ভাল লাগে না।
মাগো বাবা কি নিষ্ঠুর
তাই নাহ বলো?
সেই  দশ বছরে যে বের হলাম
আজ ২৪ ফেরা হয়নি বেশ।
মাগো আমার কনো
অভিমান নেই কনো রাগ নেই
কনো অভিযোগও নেই,
শুধু মন্টা যানতে চায় –
তুমি কোথায় , কোথায় মাগো।
তুমি বলো মাগো
তোর বাবাও লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে,
তবে কি বাবারা এরকমি হয়
তারা কেন নিজের কষ্ট লুকিয়ে রয়।
চৌদ্দ বছর হলো
আজও ফেরা হলো নাহ।
মাগো আমি বলতে পারি না
বাবার কাল চুলগুলো সাদা হলো,
তোমার চোখের নিচে কালো হলো,
ছোট বাবুটা বড়ো হয়ে গেলো।
বাড়ির দেয়ালে লেলপি পরেছে
আশ-পাশের বাড়ি গুলো পাকা হয়েছে
শুধু আমাদেরটাই আধাপাকা তে রয়েছে,
মাগো জীবন যদি এমন হয়
তবে চাই নাহ এ জীবন,
আমিতো বড় খোকা হতে চাইনি-
আমিতো প্রতিবাদী হতে চাইনি,
শুধু চেয়েছি বাড়ির কিছু সৃতি
তোমাদের বুড়ো,বুড়ি হওয়া দেখতে
তোমার কলে মাথা রাখতে
আর ছোটবাবুটার সাথে খেলতে।
তোমরা কেন আমায় দূরে দূরে রাখলে
হয়ত একটু দুষ্ট ছিলাম
সারাদিন খেলতাম
আর তোমায় মাঝে মাঝে মিথ্যা বলতাম
তার শাস্তি কি এই চৌদ্দ বছর,
নাকি বাবার প্রতিযোগিতায়-
বড় হবার নেশায়।
তো আর কত বড় হলে
তোমার আবার নিবে কলে।
সেই যে বাড়ি ছাড়া
আজও হল নাহ ফেরা
কবে হবে তাও জানি-নাহ।
মাগো চৌদ্দ বছর যে হলো
মৃত্যুদণ্ডের আসামিও যে ছাড়া পেলো
শুধু আমি রয়ে গেলাম,
আমার শাস্তি যদি এই হয়
তবে খুনের শাস্তি আরও চৌদ্দ বছর হোক।
মাগো আমার ঘরের দেয়ালের
অ,আ,পাখি,গাছের ছবিগুলো কি উঠে গেছে?
বাড়ির উঠানের ছোট আমগাছের
গা কেটে লেখাটা কি অনেক উঁচুতে উঠেছে?
মাগো আমার আম গাছের দোলনাটা
এখনো কি দুলে আর কর কর শব্দ হয়?
আম গাছের দোলনা থেকে পড়েনি
এমন দিন একটিও যায়নি।
মাগো দেখতে দেখতে চোদ্দ বছর হলো
কাঠ-গোরার ঐ আসামিটিও ছারাপেল।
পড়ায় ভুল করলে বাবা খুব মারত
এখনো ভুল করি কিন্তু কেও মারে নাহ।
তাই তুমিও আর আদর করনা।
সারারাত বাবা দার করিয়ে রাখতো
আর তুমি শুধু এ ঘড় ও ঘড় করতে
আর একটু পর পর বাবা কে বলতে হয়েছে
কাল বাকি পড়া করবে সে।
বাবার গারির শব্দে কতবার খেলা ছেরেছি
পরে দেখেছি বাড়ির মিস্ত্রি,
মাগো কবে কবে বাড়ি যাব
তবে আমার কি আর ফেরা হবে না,
তোমাদের ছারা আমি যে বড্ড একা
কবে হবে তোমাদের সাথে দেখা
মাগো চৌদ্দ বছর যে হলো
শুধু হল নাহ বাড়ি ফেরা...।।