ঘুমিয়ে যাবার মতো আমাদের ওয়ারিশাণদের কান্নাগুলো এসে,
রোজই আমায় তন্দ্রাচ্ছন্ন করে চলে যেতো তেপান্তরের অদূরে।


ক্রন্দনের সেসব অভিজাত্য আর অভিলাষি সুর প্রতিনয়তই,
তারা দল বেধে বাজাতো আমার নিদ্রার সমূহ বাতাবরণে।


সেসব জমকালো কান্নার আয়োজন আজ ইতিহাস হয়ে গ্যাছে অনন্ত,
নির্জন নিশির মধ্যাহ্নে চাইলেও সেই ক্রন্দন বিলাপ শোনা যায়না এখন।


কান্নার সুমধুর রোল তোলা সে সমস্ত জাতি গোষ্ঠি,
দলবদ্ধ বহর যোগে কালের বিবর্তনে নির্বাসিত হয়েছে, আধুনিক সভ্যতা কর্তৃক।


আচ্ছা এই চাকচিক্যের বেঘুরো আধুনিকতার সভ্যতা কি,
আদৌ কখনো বুঝেছিলো সেই সব কান্নার সুপ্ত অর্থমালা?


নাকি শীর্ণ জীর্ণ পুরোনো জনপদ ভেবে নিমিষেই পিশিয়েছে তাদের,
নির্মম ও হিংস্রতার উত্তপ্ত উঁনুনে প্রকান্ড অমানবিকতায়!


সভ্যতার সেসব অদৃশ্য গলিত করোটির দোহায় দিয়ে হে ধরণী,
বলো কতকাল আর পৈশাচিকতার দারুণ সব সংজ্ঞা এঁকে যাবে?


বলো কতটুকু ভূপৃষ্ঠের আয়তন তুলে দিলে প্রাণান্ত,
নিভবে তোমার আজন্ম পিশাচি চিত্তের লেলিহান শিখার দাবানল।


বিশ্বাস করো হে সভ্যতা,
আমাদের পাকস্থলী নিকষ বুভক্ষে হয়ে গেছে ম্যাচম্যাচে পলিথিন,
চোখের দৃষ্টি জুলুমের বেদম প্রহারে হয়ে গ্যাছে বড্ড মুমূর্ষ।


আমাদের দেহ পিঞ্জরে আজ বাস করে অজস্র সহস্র অভাবের সম্রাট,
শরীরের অন্দর মহলে দিব্যি শুয়ে থাকে ক্ষুধার সম্রাজ্য।


আমাদের হয় চিরতনের বিনাশ করো সমূলে,
না হয় বস্তাবন্দি করে নিক্ষেপ করো ঐ তিমির দেহযষ্টিতে।


তবুও আমাদের নির্বাসিত করোনা।


হয় মুক্তি দাও,
না হয় মৃত্যু দাও।



রচনাকাল-
খরুলিয়া, কক্ִসবাজার।
2015.Apr.29_01.05 রাত্রি।