মানব থেকে যন্ত্র হয়ে, ছাড়লাম যেদিন মাতৃভূমি,
যেদিন থেকে ভীনদেশে, বদলে গেছি এই আমি।
মায়ের আদর, বাবার শাসন, বোনের খুনসুটি,
হৃদয় বাক্সে সঙ্গে করে, নিয়ে এসেছি।
বন্ধুবান্ধব,আত্মীয়জন,মনের ময়নাটা,
ফেলে আসতে কষ্ট ভীষন, পিষ্ট হৃদয়টা।
রোজ সকালে বলতো মা  জানালাটা খুলে,
এতবেলা ঘুমায় কেউ বাউন্ডুলে ছেলে।
এখন আমি সূর্য জাগাই,নিজেই বেলে রুটি বানাই,
যে কোনোদিন ডিম ভাজি নি, মাছ ভাজি ডুবোতেলে।
ভাবো যারা প্রবাসীরা মহাসুখে বাস করে
ভেবে দেখো,সুখ কি মেলে, মনটা যাদের ঘরে।
রোগে- শোকে নিজেই নিজের খেয়াল মোরা রাখি,
ঈদে- পুজোয় আনন্দে নই, কাজেই ডুবে থাকি।
বাড়ির জন্য মনটা কাঁদছে, যাবার উপায় নাই ,
সবার জন্য শপিং করবো, কামাই আরো চাই।
মামা সেদিন ফোন করল,চাইলো যে আইফোন,
ছোটখালা গলার হার,ট্যাব চেয়েছে বোন।
ময়নাটা মোর  কিছুই চায় না, চায়  শুধু সে মোরে
না চাইলেও তার জন্য, লাগেজ নেবো ভরে।
তার উদরে সন্তান মোর ধীরে ধীরে বাড়ে
ফেরার আগেই জাদু আমার আসবে এ সংসারে।
প্রবাসীরা বিয়ের পরে সেই যে যায় চলে
ফিরতে ফিরতে সন্তান তার ভর্তি যে স্কুলে।
সন্তান খোঁজে বাবার আদর,বাবা মেয়ে -ছেলে
আব্বু ডাক ফোনে শোনে, দুধের স্বাদ ঘোলে।
খবর শুনি হরহামেশাই, লাশ হয়ে ফিরছে তারাই
বাবা মায়ের লাশটা যারা নেয়নি কাঁধে তুলে।
প্রবাসীরা কাঁদবে যে ভাই, মুছবে কে তার পানি?
পরিবারের জন্য তাদের জীবনটাই কুরবানি।।