দেখো আজ আমরা যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি- এই যাত্রা মোটেই মসৃণ ছিল
না। আমরা দিগম্বর ছিলাম। নিজেরাই নিজেদের রক্ত পান করেছি। যখন
খুশি ছিঁড়েখুঁড়ে চিবিয়ে খেয়েছি নরম মাংসের শরীর। তখন তাদের কোনও
নামও ছিল না। আমরা ঘুমোতাম বনেবাদারে। আমরা খেতাম গাছের ফল
পাকড়। পাথরে পাথর ঠুকে আগুন জ্বেলেছি। যত্রতত্র নির্লজ্জ মলমূত্র ত্যাগ
করেছি। জানি, সে সব ইতিহাস তোমাদের এক বিন্দুও জানা নেই। আমরা
আদতে মানুষই ছিলাম না। তখন আমাদের কোনও নাম ছিল না। অদ্ভুত
আঁধার এক ধূম্রালোক ছিল আমাদের পৃথিবী। তখন পৃথিবীরও কোনও নাম
ছিল না। সে সব নামগুলো আমরা মানুষেরাই পরবর্তীতে দিয়েছি। বড্ড ক্ষীণ
একটি শূন্য থেকে শুরু হয়েছিল আজকের মানুষের এই যাত্রা। তারপর অনেক
ঝর ঝঞ্ঝা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ আমরা এসে দাঁড়িয়েছি এখানে- এ পর্যন্ত।
এ যাত্রা এখনও শেষ হয়নি। এ যাত্রার আসলে কোনও আদি অন্ত নেই। চলছে
চলছে তো চলছেই। আমরা সবাই রয়েছি এর মাঝে। এ যাত্রা অনন্তকালের।
কিন্তু তোমরা নির্ঘাত এ সবের কিচ্ছুটি জানো না। তোমরা এখনও সেই শূন্যেই
পড়ে আছো। তোমাদের জন্য আমার বড্ড করুণা হয় জানো! তোমরা আসলে
বঞ্চিত মানুষের এই বিরাট গৌরব যাত্রার অংশীদারিত্ব থেকে। তোমরা দারুণ
রকম পরাজিত একদল প্রাগৈতিহাসিক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র নোংরা সরীসৃপ হয়েই টিকে
আছো পৃথিবীতে। টিক টিক টিক করে ওঠা দেয়ালের ওই লিকলিকে টিকটিকিগুলোর
মতোই মূল্যহীন তোমরা সভ্য পৃথিবীতে। তোমরা পাপিষ্ঠ, অভিশপ্ত। শুধুমাত্র
একটি তুচ্ছ নারী শরীরের জন্য বেমালুম বিকিয়ে দিতে পারো নিজেদের পুরুষত্ব
ও মনুষ্যত্ব দুটোই! ছি! কী লজ্জা! কারণ তোমরা পোকামাকড় প্রজাতির ঘৃণিত
নির্লজ্জ ঝঞ্ঝাটে নোংরা একদল ক্ষতিকর সরীসৃপ, তাই পারো। কিন্তু প্রকৃত
পুরুষ কখনওই পারে না।