এই কাঁধে তোরে একদিন চড়াইয়া বাপ-ধন
আমোদে বেড়াইতাম ঘুড়িয়া ......
আজি পাষানে  বাঁধিয়া হিয়া, অষাঁঢ় কাঁধে
শেষ বারের মতো উঠাইলাম বাপ-ধন
তোরে যতন ও করিয়া সাদা কাপড়ে জড়াইয়া.....!
এই দিন দেখিবার তরে, খোদা বুঝি হায়
রাখিয়া ছিলো প্রান পাখি মোর হৃদয়ে গাঁথিয়া ....
আঁখিজল আজি ভাঙ্গিয়াছে বাঁধ বুঝি,ঝড়িতেছে দু চক্ষু মজি,
বাপ-ধন তোরে রাখিয়া একা শূন্য হাতে কি করে ফিরি বাড়ি ?
হাড়াইয়া বুকের রতন , কান্দিতেছে পাগলের মতন
ক্ষনে ক্ষনে হইয়া বেহুঁশ ,মমতাময়ী তোর জন্মদাত্রী...!
আদরো করিয়া ,যতনও করিয়া যে রাখিতো তোরে
আঁচলে বান্ধিয়া ,সেই ধন আমি মাটির কবরে কি করিয়া রাখি?
কি জবাব দিবো তারে মনে মনে ভাবিয়া মরি.....
কাঁধে জোয়ান পুত্রের লাশ,ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস
পাহাড় সম ভার বহিতে নাহি পারি....
কলিজা যাইতাছে ফাটিয়া ,পারিনা ছিড়িয়া তাহারে
বাহিরে আনিয়া আপনও হস্তে বঁধি !
দেখিয়া গোর ভাঙ্গিলো ঘোড়,কাপিয়া উঠিলো সিনা ,
আদরের মানিক আমার , কলিজা ছেড়া ধন  বুঝি
অনন্ত নিদ্রা যাইবে এই মাটির বিছানায় পরিয়া..?
একদিন মোর এই প্রসস্ত সিনায় ,শুইয়া ঘুমাইতো খোকা
কচি দুটি বাহুতে জড়াইয়া ধরিয়া রাখিতো মোর গলা ....!
সে কথা ভাবিতে ভাবিতে মোর নয়ন যুগল গেলো ভাসিয়া ....
পিতার হস্তে পুত্রের দাফন,আসমান পরে ভাঙ্গিয়া___
আদরের মানিক আমার, ক্ষমা করিস এই অভাগা পিতারে তোর
যে তোরে এই অন্ধকার ঘরে রাখিয়া যাইতেছে এঁকা   ।।



নির্জন আহমেদ অরণ্য