স্বর্গের যেই দেবী ভুল করে,
আমার জীবনে স্বর্গ নিয়ে এসেছিলো,
সে  আমায় রেখে স্বর্গে চলে যাবার পর,
আমি এখন  অব্দি ঠিকঠাক একা একাই
নিজের সাথেই সংসার করছি।
সকালে উঠছি নিয়ম করে, ঘরের চারপাশ হাঁটছি ,
বারান্দায় দুটো গাছ লাগিয়েছি,
বেলী আর অপরাজিতা।
সকাল বিকেল নিয়ম করে গাছে জল দিই,
মাথায় তীব্র ব্যথা হলে ঢকঢক করে টাফনিল গিলি।
সে চলে যাবার পরেও আমার শহরে শূন্যতা নেমে আসেনি,
বরং উচ্ছলতায় বসন্তের আবীর মেখে গেছে ।
রান্নাও কিন্তু করছি, স্নান সেরে তেল লাগাচ্ছি আয়েশে,
মাথার চুল কেটে ঠিকঠাক রাখছিও আবার।
নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে বাজারে ,আড়াইশো গ্রাম
আলু কিনেছি সকালে।
মুরগী দিয়ে নতুন আলুর ঝোল রান্না করলাম ।
ঘ্রাণ টা কিন্তু বেশ সুভাষ ছড়িয়েছে।
ওহ বলাই হয় নি, ব্লগেও আজকাল কবিতা লিখছি নিয়মিত।
সকলের কাছে সব কিছু ঠিক ঠাক লাগছে।
শুধু মাত্র আমি জানি!
রাত্রি এলে কি বিষাদ অবসাদ আমার ঘুম কেড়ে নেয়,
শুধু আমি জানি, ঘরের বাতাসে নেই তার অবাধ উড়াউড়ি।
স্যালুনে চুল কাটতে গিয়ে পেছন দিকটা ঠিক আছে কিনা?
দেখতে হয় আয়নায়!
রান্নায় স্বাদ কেমন হলো? জিজ্ঞ্যেস করি কাকে?
আমার তো অতো ধৈর্য নেই, বেলী গাছের পাতা একটা একটা করে,
মুছে ধুলোবালি পরিষ্কার করার।
কাপড় ধোঁয়ার অভ্যাস টা আজো হয়ে উঠলো নাতো ।
পিঠের পাশ টা যে বড্ড ফাঁকা লাগে,
মেডিসিন বক্স টা এগিয়ে দিয়ে বলছে না কেউ,
বেশি করে জল গেলো ।
স্নান শেষে বের হলে কেউ করছে না শাসন
মুখের মধ্যে তেল মেখো না তো ।
বাজার থেকে এসে কাউকে ঘুমোতে দেখছিনা নিত্য দিন।
খানিক পর পর কেউ বুকের মধ্যে ঝাপটে পড়ছেনা শিশুর মতো ।
এই যে অবাধ শূন্যতায় চায়ের কাপে চিনি কম বেশির খেয়াল
কেউ রাখছে না-আমার কাছে তো শূন্যতা বলতে অতটুকুই ।
এঘর ওঘর সিনেমা আর সিগারেটে কি এক জীবন কাটানো যায়?
একটা সিগারেট কি একা শেষ হয়?
বাংলা সিনেমা খুজিনা আর!
আমার কাছে শূন্যতা মানে অতটুকুই,
আমার কাছে শূন্যতা মানে অতটুকুই ।