৫.
তারপর চোর খুঁজে নেয় নতুন পথ পুরাতন পৃথিবীর
প্রিয়-অপ্রিয় পদরেখা ধরে।


৬.
আমার স্বপ্ন এসে পথভোলা হাওয়াকে খোঁজে।
হাওয়া গেছে নদীর ওপারে, কেউ নেই ঘরে
ওপারে বিন্দু বিন্দু আলো, এপারে ক্রমশঃ
জমে ওঠে অপার আঁধার, নিবিড় নির্লিপ্ততা
গঞ্জের হাট পেরিয়ে, বন্দরের বাঁদর এসে
নিয়ে যায়, গতির সহাসড়কে, নতুন রোজগারে
দেখা হয় নতুন জীবন, সফেদ-সখেদ জমীন-
নতুন ঢেউ এসে ফেরায় প্রবাহকে, আদিগন্তহীন।
জানে না সে হাওয়া আমার অস্তিত্ত্ব
কিভাবে মিশে আছে শয়ন-স্বপন-জাগরণ
তার আসা চলে যাওয়ায়, পারস্পরিক দিনানিপাতে
জানেনা কেউ, জানবেনা কোনদিন।


তবু খুঁজি তাকে প্রবহমান ঢেউয়ের
প্রতিটি ভাঙ্গনের ভিতরে, কান পেতে-চোখ রেখে
আমি তাকে খুঁজি রেলসড়কের লাখো কোটি
প্রস্তরখন্ডের বিস্তারে, ল্যাম্পপোস্টের আলো-আঁধারে
নগরের পথে, অলিতে গলিতে, বনে প্রান্তরে,
পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, নিদ্রাহীন, কদাকার, ক্লান্ত
জলে ভেজা সবুজ ডাঙ্গা বা তাপদাহে জ্বলন্ত মরুময়তায়
খুঁজি তাকে, আদিম আমাজান-কঙ্গো হতে আফ্রিকা হয়ে
সোনার খনিতে, তৃণভূমিতে, সভ্যতা থেকে সভ্যতা ময়;
তার খোঁজ জীবনের অনুষঙ্গ হয়, স্বপ্নে, জাগরণে
কর্মে বা কর্মহীনতায়, বৈরাগ্য বা সাংসারিকতায়
পরিব্রাজকতায় বা বুঁদ হয়ে অনড়, স্থবির ব্যাঙের মতো
পড়ে থাকা কোন পানশালায় বা ইস্টিশানের
ওভারবীজের নিচে, কাত হয়ে পড়ে থাকা অস্তিত্বহীনতায়;
অথবা পতিত কোন রাজকীয় গৃহের ধ্বংসস্তুপের ভিতরে
বিবদমান প্রতিটি গোষ্ঠীর দ্বন্দের গুঢ়তার ভিতরে বা
প্রবল কুয়াশাময় কোন শীতের ভোরে একমুহূর্ত দেখা
ছায়াহীন কায়ার পশ্চাদপসারণতায়
আমি খুঁজি তাকে আমার বুকের ভিতরে, পাঁজরের খাঁজে,
হৃদস্পন্দনের প্রতিটি উত্থান-পতনে আর
পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি ধুলিকণার স্বর্ণময়তায়।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//১৮ জুলাই ২০১৫; শনিবার; ০৩ শ্রাবণ ১৪২২//ঢাকার জীবন