বয়স বদলায় প্রয়োজন বদলায়
প্রয়োজনহীন চাহিদাও বদলায়।


বয়স বদলায় দৃশ্যপট বদলায়
জীবনের বিদ্যমান সংজ্ঞাও বদলায়।


আমাকে বদলে বদলে-সময়
এতটাই বদলেছে যে নিজেকেই ঠিক
চিনে উঠতে পারি না-যখন যাই
নিজের ভিতরের মানুষটাও কেমন যেন অচেনা।


কবিতার পঙক্তি বদলায়
শব্দের বিন্যাস বদলায়, বদলায়
শব্দে শব্দে গাঁথুনীর মাল-মসলা,
কবিতার দেহ বেয়ে উঠে আসে
গদ্যের সরীসৃপ, সময়ের নেকাবে ঢেকে।
যখন একেবারে সামনে এসে দাঁড়ায়
ঠেকানোর উপায় থাকে না।
গদ্যের বিষে নীল হয় কবিতা
সময় বদলের ধাক্কায় কবিতা কবিতা থাকেনা।


ভালবাসার ঝংকৃত বীণা, একই তারে
আগের মতো সুর তোলেনা; সময়ের
নিপূণ ভাস্কর পরিবর্তনের শাবলে-
হাতুড়ী-ছেনিতে ছেঁটে ফেলে অবেগের মেদ-দেহ
ভালবাসা আর ভালবাসা থাকেনা;
যে ভালবাসা খাদে এসে জমে
তার ভিতরে থাকে শুধুই প্রয়োজনের কংকাল
তাতে আর কোনো আবেগ-সৌষ্ঠব থাকে না।


সময় বদলায়, সাথে বয়স বদলায়
গায়ের রং বদলায়, চুলের বর্ণ বদলায়
কথার ভাষা বদলায়, ভাষার কথা বদলায়।


অঢেল বদলের ঘূর্ণীপাকে, দুর্বিপাকে
বদলহীন থাকে একটি জিনিস শুধু,
বদলায় না একটি দ্রব্য, একটি সময়-নিষ্ঠ..
একে একে অনেক হয়ে অপরিবর্তনীয়
মানবলগ্ন হয়ে থাকে একটা কিছু- ‘স্বপ্ন’।


যে কথা বলা হয়নি, যে হাত ছোঁয়া হয়নি
যে গানে মেলানো হয়নি সুর
যে মুখে শোনা হয় নি শেষ প্রশ্নের উত্তর
যে অভিমান শ্বাসরোধ করে এই বয়সেও
যে প্রশ্নের জবাব মেলে না, শতেক পাপড়ি
খুলে ফেললেও উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না;
সেই অপূর্ণতা স্বপ্ন হয়ে পাখা মেলে
স্বপ্ন হয়ে ভর করে করোটির ছাতার নিচে
মাথার ভিতরে, সারাক্ষণ তার
নতুন বুনন, নতুন রচনা
না কোন গদ্য না কোন কবিতা
কেবলই নতুন স্বপ্ন বোনা
স্বপ্নের নিবিড় বুনন-
তার কোন বদল হয় না;
মৃত্যু এসে ভরে তুলুক না কেন বয়সের আঙিনা,
সে কখনো পুরনো হয় না, বদলায় না।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//০৩ আগস্ট ২০১৫; শুক্রবার; ১৯ শ্রাবণ ১৪২২//ঢাকার জীবন