সব পিতা এক কিন্তু সব পুত্র নয়
পিতার সান্নিধ্য সুধা কত পুত্র পায়?
পিতা আশ্রয়, পিতা গুরু, পিতা প্রাতজন
যখন বিরাজমান সে অমূল্য ধন
বোঝে না কোন পুত্রই, অবহেলে ঠেলে
অথবা ব্যাক্তিত্ব এসে প্রাচীর গড়ে তোলে,
নয়তো মানাভিমান, কুয়াশাময় স্নেহ
এক অন্তর এক প্রাণ পৃথক দুই দেহ।
বোঝেনা অর্বাচীন, পিতা অভিমানী
প্রাণ চায় বুকে ধরি, মুখে ভিন্ন বাণী।
টানা ও পোড়নে কাটে কত শত বেলা,
প্রত্যুষ নিদাঘ শেষে আবীরের খেলা।
ধীরে ধীরে বোধ বাড়ে, ঢেউ কমে আসে,
পুত্র শেখে পিতামন্ত্র, টান পড়ে রাশে,
নবীন মন্ত্রে পুত্র নতুন পালক হাতে,
পিতাকে আলিঙ্গনে বাঁধে নাগপাশে।
সময়ের শানিত ছুরি করে ফালা ফালা
বাঁধা যায়না পিতৃব্যতন্ত্র নীরাজন বেলা।
উদাস দু’চোখ খোলা পিতা দিব্যজ্ঞানে,
পরম নির্ভরতায় পার্থিব বিধানে,
আলোটুকু মিইয়ে দিয়ে অপার্থিব প্রার্থনা
হে সর্বক্ষমতাময় বিপন্ন করো না,
পুত্র আমার, ছায়া আমার, দেখে রেখ তাকে
সে যেন অালো ছড়ায় আগামী প্রভাতে।
তার আলোয় উদ্ভাসিত হোক পরম্পরা,
তার হাতে তুলে দাও কালের মন্দিরা।
পুত্র মনে কালবোশেখী, কাঁধে পিতার ভার
এ ‍যুদ্ধে লড়তে হবে থাক না তিরস্কার
একইমন্ত্রে উজ্জীবিত ভিন্ন দু’টি প্রাণ
পিতা-পুত্র প্রেমাস্পদ, আছে অনির্বাণ।
একের অন্তর্ধান চলে যাওয়া নয়,
এ শুধু দেহান্তর, চেতনা অক্ষয়।
পিতা-পুত্র এক সরণী, দীর্ঘ নিরন্তর
সময়ে বুঝলে কি হয় অশ্রু ঝরঝর!!


এস, এম, আরশাদ ইমাম/ /অবিনাশী সময়
১৮ আগষ্ট ২০২৫; মঙ্গলবার; ০৩ ভাদ্র ১৪২২; ঢাকা।


(আজ আমার পিতার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী; ২০০৫ সালের ১৮ আগস্ট অপরাহ্ণে ঢাকার রেনেসাঁ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেটা ছিল আমার আশ্চর্য্য সময়, দিন না রাত না সন্ধ্যা কিছুই বোধগম্য হচ্ছিল না। Time dilution এর ভিতরে ছিলাম। আজ সেই দিন। আব্বা তোমাকে স্মরণ করছি। প্রাত্যাহিকতার ভেতরে, প্রতিক্ষণ; তবুও আজ এই বিশেষ স্মরণ।)